বিপিএলের মঞ্চে কথাটি বলতে বলেছিলেন বাবাঃ সালমান খান

সন্ধ্যা থেকে মঞ্চে একে একে মাতিয়ে যাচ্ছেন সব তারকা শিল্পী। তবুও সবার অপেক্ষা কখন আসবেন তাঁরা দুজন। তাঁরাই যে ছিলেন এ অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। রাত ১০টার পরে মঞ্চে উঠলেন বলিউড তারকা সালমান খান-ক্যাটরিনা কাইফ। নাচে-গানে আলোর ঝরনা ধারায় রাতটা আলোকিত করলেন। নাচে-গানেই শুধু নয়, বলিউড তারকারা মুগ্ধ করলেন কথা দিয়েও।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেই সালমান-ক্যাটরিনা দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সে আলাপচারিতায় সালমান অভিভূত। বলিউড তারকা মঞ্চে সে মুগ্ধতা ভাগাভাগি করে নিলেন দর্শকদের সঙ্গে, ‘আমরা সত্যিই আপনাকে ভালোবাসি শেখ হাসিনাজি। তিনি তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। শুধু নামই হাসিনা নন, বাস্তবেও তিনি হাসিনা (সুন্দর)। মনের দিক থেকে হাসিনা, দেখতেও হাসিনা। আমরা একটু আগেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁর সুন্দর হাসি, মর্যাদাবোধ, এমনকি কণ্ঠ অসাধারণ এবং তাঁর চোখ! তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আমরা আপনাকে ভালোবাসি।’

সালমান যখন মঞ্চে প্রশংসা করছেন, প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট বক্সে লাজুক হাসছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী, কত কঠিন-জটিল সব কাজে ডুবে থাকতে হয় তাঁকে। এমন বিনোদনদায়ী অনুষ্ঠানে সব সময়ই তো আর আসা হয় না। শেখ হাসিনা কাল প্রাণখুলে চার ঘণ্টা শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বসে অনুষ্ঠানটা উপভোগ করলেন।

সালমান অবশ্য তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সবার আগে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে এই বিপিএলের নামকরণ। মঞ্চ ছাড়ার আগে বলিউড তারকার হঠাৎ মনে পড়েছে বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, গীতিকার সেলিম খানের কথাটা। আসার আগে বাবাকে যখন জানান বাংলাদেশে যাচ্ছি, তখন সালমানকে বিশেষ নির্দেশনা দেন তাঁর বাবা।

বাংলাদেশে আসার আগে সালমান খানের বাবা প্রখ্যাত গীতিকার সেলিম খান কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন সালমান খানকে। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মঞ্চে বাবার পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন বলিউড তারকা

নির্দেশনাটা কী ছিল, সালমান সেটি বলেছেন এভাবে, ‘এখানে আসার আগে বাবাকে বললাম, বাংলাদেশে যাচ্ছি। তিনি আমাকে বললেন, মঞ্চে উঠলে অবশ্যই একজনের নাম নেবে, কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমার বাবা তাঁর অনেক বড় ভক্ত। তার অনুমতি নিয়ে এখানে এসেছি। বাবার নির্দেশ অনুযায়ী আমি তাঁর (কবি নজরুল) নাম নিচ্ছি। তাঁর বেশির ভাগ কবিতাই আমার বাবার পড়া।’

বিপিএলের মঞ্চে বঙ্গবন্ধু এলেন। সালমানের সৌজন্যে এলেন কাজী নজরুলও। কবি-কবিতা, গান-নাচ, রঙিন আলোর ফোয়ারায় শেরেবাংলার এ রাতটা হয়ে উঠল নানা রঙে রঙিন। অনুষ্ঠান সূচির সময় কিছুটা এলোমেলো, দেশীয় শিল্পীদের তুলনায় ভারতীয় শিল্পীদের অতিরিক্ত প্রাধান্য, মমতাজের অনুপস্থিতি—এসব টুকটাক বিষয় চোখে লাগলেও বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা বেশ গোছাল আর জমকালোই হলো।

তবুও অনুষ্ঠানে একটা শূন্যতা কারও চোখ এড়াল না, যে উপলক্ষে এ বিরাট আয়োজন, পুরো অনুষ্ঠানের ক্রিকেটের কোনো ছোঁয়াই থাকল না। ২০১৫ বিপিএলের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ক্রিকেটারদের একটা পর্ব ছিল। প্রতিটি দলের ‘আইকন’ খেলোয়াড়েরা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নিজ নিজ দলের জার্সিতে মঞ্চে উঠেছিলেন। কালও কি এমন কিছু করা যেত না?

Scroll to Top