দ্বিতীয় বলেই চার, প্রথম দুই বলে ৬ রান। ১৪৯ রানের লক্ষ্যে দারুণ শুরু তো বটেই। কিন্তু সে আনন্দ মিইয়ে দিতে দেরি করেননি লিটন দাস। প্রথম ওভারেই শেষ তাঁর চার বলে ৭ রানের ইনিংস। এ ধাক্কা সামলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষের ঝড়ের জন্য সামলে নেওয়াটা ভালই কাজে লেগেছে। একদম শেষ মুহূর্তে মুশফিকের দারুণ ফিনিশিং ইতিহাস গড়া এক জয় এনে দিল বাংলাদেশকে। সাকিব তামিমবিহীন এক দলই ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয় এনে দিল বাংলাদেশকে। ৩ বল থাকতে ৭ উইকেটের জয় বাংলাদেশের।
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের জয়ের পর সুগম হয়। মুশফিক আর সৌম্যের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় যায়। সোম্য আউট হওয়ার পর মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিংয়ে এ জয় আসে।
অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার প্রথম ৬ ওভারে ৪৫ রান এনে দিয়েছেন। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় গতিতেই তখনো এগচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু যুজবেন্দ্র চাহাল বোলিংয়ে এসেই বদলে দিলেন সব। ২৮ বলে ২৬ রান করে ফিরলেন নাঈম। ৫৪ রানে দ্বিতীয় উইকেত হারাল বাংলাদেশ। চাহালের লেগ স্পিন থেকে রানই বের করতে পারছিলেন না মুশফিকুর রহিম ও সৌম্য। এর মাঝে একটি জোরালো এলবিডব্লুর আবেদন উঠেছিল মুশফিকের বিপক্ষে। আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি, ভারতও রিভিউ নেয়নি। পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে, রিভিউ নিলেই ড্রেসিংরুমে ফিরতে হতো মুশফিককে।
সাবেক অধিনায়কের রান তখন ৬ (৮ বলে), বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৬১। চাহালের প্রথম দুই ওভারে মাত্র ২ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৬২ রান। বাকি সময়ে দরকার ৮৭ রান। সেটা ৫ ওভারে নেমে এল ৫০-এ। হাতে তখনো ৮ উইকেট। ৩৪ রানে সৌম্য আছেন এক প্রান্তে, অন্যপ্রান্তে ২৮ রানে মুশফিক। টি-টোয়েন্টিতে এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং দলই এগিয়ে থাকে।
১৬তম ওভারে মাত্র ৬ রান আসায় চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। খলিল আহমেদের প্রথম বলেই হুক করে ছক্কা মারলেন। কিন্তু পরের দুই বলেই আবার ডট। পরের দুই বলে তিন রান এল। ষষ্ঠ বলেই আবার হতাশায় ডুবল বাংলাদেশ। উইকেটের পেছনে বল পাঠাতে গিয়ে গতিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড সৌম্য। ৩৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে দুই ছক্কার সঙ্গে এক চার ছিল তাঁর। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে আবার জীবন পেলেন মুশফিক। সীমানায় তাঁর সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে চার বানিয়ে দিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। এবারও অভাগা বোলারের নাম চাহাল। ৩৮ রানে আরেকবার জীবন পেলেন মুশফিক। চাহালের সে ওভারে ১৩ রান পেয়েছে বাংলাদেশ।
শেষ ১২ বলে ২২ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। প্রথম দুই দলে মাত্র ২ এল। পরের চার বলে টানা চার ৪ মুশফিকের। শেষ ওভারে দরকার ৪ রান। তবে উইকেটে থাকা মুশফিক-মাহমুদউল্লাহই একবার শেষ ৩ বলে ২ রান তোলার কাজ করতে পারেননি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এ তথ্যটাই অস্বস্তি বাড়াচ্ছিল। প্রথম বলেই ডট দিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৫ বলে দরকার ৪ রান।
পরের বলে ২ রান নিয়ে চাপ কমালেন অধিনায়ক। পরের বলেই ওয়াইড। ম্যাচ টাই। ৪ বলে ১ রান দরকার বাংলাদেশের। ছয় মেরেই জেতালেন মাহমুদউল্লাহ। ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক।