যা ঝলক দেখানোর দেখিয়ে ফেলেছেন, পুলিসিচের আর উন্নতি হবে না। পুলিসিচকে কেনাই হয়েছে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে, আমেরিকান বাজারে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যই কিনেছে চেলসি কত কথা! সে পুলিসিচই গতকাল দেখিয়ে দিলেন, শুধু আমেরিকান দেখে নয়, আসলেই ভালো খেলতে পারেন বলেই তাঁর পেছনে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড ঢেলেছে চেলসি। এমন এক ম্যাচে বার্নলিকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে চেলসি।
বেলজিয়ামের তারকা এডেন হ্যাজার্ড চলে যাওয়ার পরে তাঁর জায়গায় পুলিসিচকে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে এনেছিল চেলসি। প্রথমে দুই-এক সপ্তাহ খেলানো হলেও তেমন ঝলক দেখাতে পারেননি এই তারকা। প্রিমিয়ার লিগে গোলের দেখা পাননি। ফলে শিগগিরই তাঁর জায়গা হয়ে যায় বেঞ্চে। সুযোগ পেয়ে চেলসি মাতাতে থাকেন দলটার একাডেমির তারকারা ট্যামি অ্যাব্রাহাম, মেসন মাউন্ট, ক্যালাম হাডসন-ওডোই প্রমুখ। মূল একাদশে সুযোগই পাচ্ছিলেন না পুলিসিচ। এক এক সপ্তাহে সুযোগ পাচ্ছিলেন না, আর আস্তে আস্তে বাড়ছিল তাঁকে নিয়ে কানাঘুষা। তবে কি যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানো ও জার্সি বেচার জন্যই ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’কে কিনে এনেছে চেলসি?
গত দুই সপ্তাহ ধরেই ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, ফর্মে ফিরছেন। নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে বদলি হিসেবে নেমে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। গতকাল তো মূল একাদশেই নামলেন। আর নেমেই ভাঙচুর চালালেন বার্নলির রক্ষণভাগে। করলেন হ্যাটট্রিক, তাও আবার বার্নলির মাঠেই!
গতকাল বার্নলিকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে চেলসি। হ্যাটট্রিক করেছেন দলটির আমেরিকান তারকা ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ।
প্রথম গোলটা ছিল তাঁর দুর্দান্ত বাঁ পায়ের এক অসাধারণ বিজ্ঞাপন। স্টেপওভার করে এক ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলে আরেকজনের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়ালেন এই আমেরিকান তারকা। প্রথম গোলটা যদি বাঁ পায়ের বিজ্ঞাপন হয়, দ্বিতীয় গোলটায় পুলিসিচ সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, তাঁর ডান পা-ও কম নয়। মাঝমাঠ থেকে বার্নলির গোটা রক্ষণভাগকে পেরিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে পরাস্ত করলেন গোলরক্ষক নিক পোপকে। বিরতির আগেই দুই গোল হয়ে গেল তাঁর।
দ্বিতীয়ার্ধের দশ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে আসা এক ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে নিজের তৃতীয় গোলটা করে ফেলেন পুলিসিচ। বাম পা, ডান পা, মাথা—তিন গোলে অবদান ছিল তিন ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গের। একদম পারফেক্ট হ্যাটট্রিক যাকে বলে! পরে ব্রাজিল উইঙ্গার উইলিয়ান একটি গোল করে ৪-০ গোলে এগিয়ে দেন চেলসিকে। পরে জে রদ্রিগেজ ও ডোয়াইট ম্যাকনিল দুটি গোল করে ব্যবধান কমালেও নিজের মাঠ থেকে কোনো পয়েন্ট পাওয়ার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। আর এই ম্যাচে বার্নলি পয়েন্ট পেলেও তা পুলিসিচের জন্য কষ্টকর হতো।
প্রিমিয়ার লিগে নিজের আগমনী বার্তা দেওয়ার জন্য ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’কে এই ম্যাচটা জিততেই হতো যে!