বিসিবির নানা সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট ছিলেন ক্রিকেটাররা। অবশেষে সবাই এক হয়ে ১১ দফা দাবি পেশ করেছেন বোর্ডের কাছে। এসব দাবিদাওয়া না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে দূরে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। দেশের ক্রিকেটের এ সংকট সমাধানে আজ দুপুরে বৈঠকে বসছে বিসিবি।
দেশের ক্রিকেট নিয়ে বিসিবির নানা সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমে ক্রিকেটারেরা অসন্তুষ্ট। অবশেষে ক্রিকেটাররা এক হয়ে তুলে ধরেছেন নিজেদের ১১ দফা দাবি। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ক্রিকেটাররা। এতে অনিশ্চয়তায় ঝুলে গেল বাংলাদেশের ভারত সফর ও চলমান জাতীয় লিগ। সমস্যা সমাধানের জন্য আজ দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসবেন বিসিবির কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের যেসব সদস্য ঢাকায় আছেন, তাঁদের নিয়ে আলোচনায় বসার কথা কালই জানিয়েছেন মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস, ‘বসে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢাকায় যারা বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আছে, তাদের নিয়ে আলোচনা হবে।’
জাতীয় লিগ চলমান থাকতে এই ধর্মঘট ডেকেছেন ক্রিকেটাররা। কাল দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে ধর্মঘটের ডাক দেন জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হাজির হওয়া ৫০ জনের বেশি ক্রিকেটারের মধ্যে ছিলেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহর মতো সিনিয়র ক্রিকেটাররাও। দুই টেস্ট এবং তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে আগামী মাসে ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ দলের। তার আগে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে যাওয়ার মধ্যে অশুভ সংকেতও দেখতে পাচ্ছেন জালাল ইউনুস, ‘এখন জাতীয় লিগ, সামনে ভারত সফরে যেখানে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত, তার আগেই এমন ঘটনা। আমরা ভাবছি ক্রিকেটকে এলোমেলো করে দিতে কেউ চেষ্টা করছে কি না।’
ক্রিকেটাররা আলোচনায় বসার সুযোগ দেননি বলে সমালোচনাও করেছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির এ প্রধান। এসব দাবিদাওয়া আলোচনার ভিত্তিতে পূরণের জন্য সময়ের দরকার বলেও জানালেন তিনি, ‘দাবি পরে, আগে তো বসে ঠিক করতে হবে। এটার জন্য তো সময় দিতে হবে। সবগুলো দাবি নিয়ে বসে আলোচনা করা যায়। ডাকারই তো সুযোগ দেয়নি। তারা বলছে দাবি না মানলে ধর্মঘট চলবে। বলে তো নাই বসতে চাই। কাল (আজ) সিদ্ধান্ত হবে কীভাবে এগোনো যাবে।’
জালাল ইউনুস মনে করেন, বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো রফা করতে না পারলে ক্রিকেটাররা তখন একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারত, ‘আমরা চাই ক্রিকেট মাঠে গড়াক। এটা নিয়ে তো দর-কষাকষি হয়ে যাচ্ছে। আলাপ আলোচনা করে কিছু না হলে তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারত। এটা তো শকিং। ক্রিকেট ইতিহাসে মনে হয় না এত বড় ঘটনা ঘটেছে।’
মিডিয়া কমিটির এ প্রধানের ভাষ্য, দেশের ক্রিকেটে এ সংকট ক্রিকেটারেরাই তৈরি করলেন। ক্রিকেটারদের জন্য বিসিবি সভাপতির দরজা কখনোই বন্ধ ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি, ‘সংকট তো আমরা তৈরি করিনি, তৈরি করেছে খেলোয়াড়েরা। ক্রিকেটারদের জন্য কি বিসিবি সভাপতির দরজা কখনো বন্ধ ছিল। সাকিবের সঙ্গে তো সভাপতির প্রতিনিয়ত কথা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে জানাল দাবি না মানলে তারা খেলা বন্ধ করে দেবে। একবারও সভাপতির কাছে এই প্রসঙ্গ ওঠায়নি। বলেতে পারত আমরা ৫-১০ জন আসছি আপনার সঙ্গে কথা বলত। সেটা প্রত্যাখ্যান করলে না হয় এটা করতে পারত।’
:প্রথম আলো