ক্রিকেটারদের অভিযোগে রোডসের বিদায়: বিসিবি সভাপতি

বিশ্বকাপ থেকে জাতীয় দলের সঙ্গেই ঢাকায় ফিরেছিলেন স্টিভ রোডস। পরদিনই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকেবুকে যায় রোডসের। কয়েকদিনের মাথায় ভগ্ন মনরথে স্বদেশে পাড়ি জমান এই ইংলিশ কোচ।

ক্রিকেটারদের অভিযোগ, ব্রিটিশম্যান রোডসের নিরুত্তাপ মানসিকতাসহ অনেক কিছুতেই কোচের সঙ্গে বনিবনা হয়নি বিসিবির। বিশ্বকাপের মাঝপথে ক্রিকেটারদের পাঁচদিনের ছুটি দেয়াটাও ভালো লাগেনি বিসিবির ঊর্ধ্বতনদের। তাই চুক্তির এক বছর আগেই রোডসকে বিদায় করে দেয়া হয়। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রোডসের বিদায়ের কারণ হিসেবে এসব তথ্যই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

ইংল্যান্ড থেকে মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরেছেন বিসিবি সভাপতি। গতকাল বেক্সিমকো কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোডস সম্পর্কে পাপন বলেছেন, ‘উনি একজন ভালো মানুষ। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। একেক জনের একেক রকম কোচিং থাকে, স্টাইল থাকে। একেক জনের একেক রকম চিন্তাধারা থাকে। আমাদেরও একটা চিন্তাধারা আছে। কোনো কোনো কোচ মনে করে এটা একটা খেলা এটা নিয়ে সিরিয়াস হওয়ার কি আছে? আবার কোনো কোচ আমাদের সঙ্গে ছিল, তারা মনে করত জিততেই হবে। যে করেই হোক জিততে হবে। এমনও আছে হারজিত নিয়ে চিন্তা করার কি আছে? জিততেই হবে এটা নিয়ে চিন্তা নেই। এটার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে।’

বিশ্বকাপের আগে লেস্টারে অর্থলগ্নি করে অনুশীলনের আয়োজন করে বিসিবি। কিন্তু কোচ সেখানে অনুশীলনটা ঐচ্ছিক করায় টাকাটা গচ্ছা গেছে বিসিবির। এছাড়া বিশ্বকাপের মাঝে ভারত, পাকিস্তান ম্যাচের আগে পাঁচদিন দেয়া হয় ক্রিকেটারদের। তখন ইউরোপে ঘুরে বেড়িয়েছেন ক্রিকেটাররা। খোদ বিসিবি সভাপতিও ছুটির বিষয়ে জানতেন না। তখন দলের সঙ্গে ম্যানেজার হিসেবে বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন, ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খানও ছিলেন। তারাও ছুটির পক্ষে কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই ছুটির দায়টা এসে পড়েছে রোডসের উপর।

গতকাল বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের আগে আমরা অনুশীলন করার জন্য আয়োজন করলাম। সেখানে আমাদের অনুশীলন হলো না। ঐচ্ছিক করে দেয়াতে কেউ এলো না। এটা তো সংস্কৃতির ভিন্নতা। ও (রোডস) মনে করেছে প্রত্যেক প্লেয়ার নিজ ইচ্ছাতেই অনুশীলন করবে। কিন্তু এটা তো আমাদের সঙ্গে মিলে না। ঐচ্ছিক তাই কেউ আসেনি। তাহলে তো লাভ হলো না। আমরা এতো টাকা খরচ করে আয়োজনটা করেছিলাম।’

বোর্ড সভাপতি আরো বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া-পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার আগে পাঁচদিন ছুটি দেয়া। বিশ্রাম দিতে পারে। সবাই চলে গেছে বাইরে। ঘুরছে ফিরছে। মনোযোগ তো এখানেই বিঘ্ন হয়। এই জিনিসগুলো ওদের সংস্কৃতিতে হয়তো ঠিক আছে। সমস্যা নেই। আমরা মনে করি, আমাদের সংস্কৃতির সাথে এগুলো খাপ খায় না।’

টিম মিটিং, ম্যাচের পরিকল্পনায় রোডস থাকতেন না বলে পাপনের কাছে অভিযোগ করেছেন ক্রিকেটাররাও। বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘এটা জানি খেলোয়াড়রা আমাদের কাছে আসে নিয়মিত, সেই নিউজিল্যান্ডে প্লেয়াররা আমার কাছে এসেছে, বিশ্বকাপের সময় এসে বলেছে যে, কোচের সঙ্গে তাদেরও কোনো কথা হয়নি। শুধু টিম মিটিংয়ে খেলার আগের দিন সে এসে উপস্থিত হয়। কোনো কৌশল নিয়েও আলাপ হয় না বা কিছুই না। সে শুধু ওখানে থাকে। আমাকে ক্রিকেটাররা এটা বলেছে।’

ইত্তেফাক

Scroll to Top