বিশ্বকাপে প্রায় সবগুলো দলেরই অন্তত ছয়টি করে ম্যাচ খেলা শেষ, বেশিরভাগ দলই খেলে ফেলেছে সপ্তম ম্যাচটিও। ওদিকে ভারতের বাকি এখনো চার ম্যাচ, অর্থাৎ মাত্র পাচঁটি ম্যাচ খেলেছে এখন পর্যন্ত ভারত।
তবে আজ বুধবার থেকে শুরু করে আগামী মঙ্গলবার, ছয়দিন ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে ভারতকে, ততদিনে সমীকরণ আরো পরিস্কার হয়ে উঠবে। আজকের ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যাদের সেমিফাইনালে ওঠার জন্য জয় ছাড়া অন্য কোনো ভাবনা মাথায় আনার উপায় নেই।
যদিও সমীকরণ বলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাদ পড়া ‘প্রায়’ নিশ্চিত। তবু কাগজ ও কলমের হিসেব বলছে বাকি তিনটি ম্যাচের তিনটিতেই জিতলে, অন্য নির্দিষ্ট দলের ব্যর্থতাকে পুঁজি করে সেমিফাইনাল খেলতেও পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিশ্বকাপের মাঝপথ পর্যন্ত এক প্রকার নিশ্চিত ছিল চারটি দলের সেমিফাইনাল খেলা- ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। তাদের মধ্যে ইংল্যান্ডের টানা দুটো হার এবং নিউজিল্যান্ডের পাকিস্তানের বিপক্ষে হার অনেকটা আশাবাদী করে তুলছে চারটি দলকে- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি চিত্র
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে পরিসংখ্যান দেখলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল। সেটা বর্তমান সময়ের সঠিক চিত্রও তুলে ধরে না।
মোট ম্যাচ খেলেছে দু’দল- ১২৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়- ৬২
ভারতের জয়- ৫৯
টাই-২
পরিত্যক্ত- ৩
বিশ্বকাপে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বিখ্যাত ম্যাচগুলোর একটি ১৯৮৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল। প্রবল শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চমক দিয়ে ভারত জিতে নিয়েছিল দলটির ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ। শুধু এই ম্যাচ নয়, সামগ্রিকভাবে বিশ্বকাপের মঞ্চে এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে ভারত।
বিশ্বকাপে দুই দলের মুখোমুখি দেখা- ৮
ভারতের জয়- ৫
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়- ৩
ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিমত্তার পার্থক্য
ভারত ব্যাটিং ও বোলিং মিলিয়ে বিশ্বকাপেরই অন্যতম শক্তিশালী দল। মজবুত উদ্বোধনী জুটি, এরপর বিরাট কোহলি, বিজয় শঙ্কর, এমএস ধোনি। ভারতের প্রধান সমস্যা লোয়ার মিডল অর্ডারের জন্য উপযুক্ত ব্যাটসম্যানরা একটু ওপরের দিকেই আছেন। মূলত শেখর ধাওয়ানের চোটের পর এই সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে।
তাই চার উইকেট পড়ে গেলেই হার্দিক পান্ডিয়ার মতো পিঞ্চ হিটারকে নামিয়ে ফেলতে হয়, যা হয়ত বিপর্যয়ের মুহুর্তে ভারতের জন্য কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু তেমন বিপর্যয়ের মুহুর্ত এখনো আসতে দেয়নি টপ অর্ডার, কোহলি শতক না পেলেও আছেন ফর্মে, রোহিত শর্মা বরাবরের মতোই সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় আছেন, হাঁকিয়েছেন দুটো শতক।
অপরদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সব ব্যাটসম্যানই ফর্মে থাকলেও ঠিক সুর মিলছে না। ক্রিস গেইল নিজস্ব ভঙ্গিমায় খেলে যাচ্ছেন কিন্তু এখনো প্রত্যাশিত ধুন্দুমার ব্যাটিং তার থেকে পাওয়া যায়নি। শাই হোপ বিশ্বকাপের আগের ফর্ম ঠিক টেনে আনতে পারেননি।
শেমরন হেটমায়ারের দিকে তাকিয়ে থাকবে দল, তার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ অভিজ্ঞতা ও ভালো স্পিন খেলার দক্ষতার কারণে ভারতের বিপক্ষে তার প্রতি আলাদা উচ্চাশা থাকবে টিম ম্যানেজমেন্টের।
বোলিং বিভাগেও ভারত যোজন এগিয়ে। ভারতের বোলিং লাইন আপের মূল শক্তি বৈচিত্র্য। ভুবনেশ্বর কুমার চোট পেয়ে মাঠের বাইরে, তবে বুমরাহ আর শামি তার অভাব বুঝতেই দিচ্ছেন না আপাতত। কেদার যাদভ, কুলদীভ যাদভ ও য়ুজভেন্দ্রা চাহাল মাঝের ওভারগুলোতে নিয়ন্ত্রণে রাখেন রানরেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং পেস নির্ভর, অ্যাশলে নার্স আছেন বটে কিন্তু তার প্রভাব কম। কেমার রোচ, শেলডন কটরেল, ওশানে থমাসরা ভালো শুরু এনে দিয়েছেন বেশ কয়েকবার কিন্তু সেটা ধরে রাখা হয়নি শেষ পর্যন্ত।
লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি