আফগানিস্তানকে অঘটন ঘটাতে দিল না ভারত

লক্ষ্যটা সহজ ছিলো, ৫০ ওভারে করতে হতো ২২৫ রান। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় পেতে এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হতে পারতো না আফগানিস্তানের সামনে। কিন্তু এই সহজ লক্ষ্যটিকেই কঠিন বানিয়ে ছেড়েছেন মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানরা।

শেষপর্যন্ত ম্যাচটি আর জিততেও পারেনি আফগানিস্তান। মোহাম্মদ শামির হ্যাটট্রিক ও জাসপ্রিত বুমরাহর দুর্দান্ত ডেথ বোলিংয়ে ১১ রানের জয় পেয়েছে ভারত। তাদের করা ২২৪ রানের জবাবে আফগানদের ইনিংস থেমে গেছে ২১৩ রানেই।

পঞ্চম ম্যাচে চতুর্থ জয় ও পরিত্যক্ত ম্যাচের ১ পয়েন্ট নিয়ে ৯ পয়েন্ট হলো ভারতের। ফলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখনও শীর্ষেই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে ছয় ম্যাচ শেষেও জয়ের দেখা পায়নি আফগানিস্তান।

২২৫ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানরেটের চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান। ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই ২০ বলে ১০ ও অধিনায়ক গুলবদিন নাইবের ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ২৭ রান।

প্রথম ত্রিশ ওভারে মাত্র ১০৭ রান করতে সক্ষম হয় তারা। উইকেট হারিয়ে ফেলে ৪টি। দুই ওপেনারের পর তেমন কিছু করতে পারেননি দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রহমত শাহ (৬৩ বলে ৩৬) ও হাশমতউল্লাহ শহিদি (৪৫ বলে ২১)।
\"\"

পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুই সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও আসগর আফগান যোগ করেন ২৪ রান। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় আসগর (১৯ বলে ৮) ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় আফগানরা। শেষের ১৫ ওভারে জয়ের জন্য বাকি থাকে ৯৫ রান।

তবে নবী উইকেটে টিকে থাকায় আশা ছিলো তাদের। নাজিবুল্লাহ জাদরান (২৩ বলে ২১) নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ ও রশিদ খানের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে তিনি গড়েন ২৪ রানের জুটি। ম্যাচ জমে ওঠে শেষের রোমাঞ্চের অপেক্ষায়।

শেষের ৩ ওভারে তাদের জয়ের জন্য বাকি ছিলো ২৪ রান। তখনই ৪৮তম ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করেন মোহাম্মদ শামি, ৪৯তম ওভারে বুমরাহ দেন আরও ৫ রান। ফলে শেষ ওভারে আফগানিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ১৬ রান।

মোহাম্মদ শামি আসেন সে ওভার করতে। প্রথম বলেই লং অন দিয়ে বাউন্ডারি মেরে লক্ষ্যমাত্রা ৫ বলে ১২তে নামিয়ে আনেন নবী, পূরণ করেন ব্যক্তিগত ফিফটিও। তবে দ্বিতীয় বল ডট এবং তৃতীয় বলে সেই লং অন বাউন্ডারিতেই ক্যাচ আউট হয়ে যান নবী।

তার আউটের সঙ্গে সঙ্গে আফগানদের জয়ের স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে যায়। সে ওভারে চতুর্থ ও পঞ্চম বলে আফতা আলম ও মুজিব উর রহমানকে সরাসরি বোল্ড করে চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন শামি। ভারত জয় পায় ১১ রানের ব্যবধানে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় ভারত। শুরু থেকেই তারা ছিল চাপে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই ভয়ংকর রোহিত শর্মাকে তুলে নেয় আফগানিস্তান। মুজিব উর রহমানের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিত বোল্ড হন ১ রানেই। ধীরে শুরু করা ভারতের বোর্ডে তখন মাত্র ৭ রান।
\"\"

দ্বিতীয় উইকেটে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি কোহলির। দেখেশুনে খেলতে থাকা রাহুলকে (৩০) সাজঘরের পথ দেখান মোহাম্মদ নবী। ৬৪ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপেই পড়ে ভারত।

সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা কোহলি আর বিজয় শঙ্করের, তৃতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৫৮ রানের জুটি। ২৯ রান করা বিজয় শঙ্করকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটিটি ভাঙেন রহমত শাহ।

এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খায় ভারত। দলের ব্যাটিং স্তম্ভ বিরাট কোহলি ৬৩ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬৭ রান করে মোহাম্মদ নবীর শিকার হন। ১৩৫ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত।

পঞ্চম উইকেটে বিপদ সামলে উঠেন অভিজ্ঞ মহেন্দ্র সিং ধোনি আর কেদর যাদব। তবে হাত খুলে খেলতে পারেননি তারাও। ১৪ ওভারের জুটিতে মাত্র ৫৫ রান তুলতে পারেন এই যুগল।

অবশেষে ৪৫তম ওভারে এসে ধোনিও আউট হয়ে যান। ৫২ বলে ২৮ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান রশিদ খানের বলে চড়াও হতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন। হার্দিক পান্ডিয়াও (৯ বলে ৭) ভয়ংকর হতে পারেননি।

এরই মধ্যে শেষ ওভারে চমক দেখান গুলবাদিন নাইব। তুলে নেন জোড়া উইকেট। মোহাম্মদ শামির (১) সঙ্গে হাফসেঞ্চুরিয়ান কেদর যাদবকেও (৬৮ বলে ৫২) আউট করেন আফগান অধিনায়ক।

লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি

Scroll to Top