মেসি ম্যাজিকে লিভারপুলকে উড়িয়ে ফাইনালের পথে বার্সেলোনা

ন্যু-ক্যাম্পে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাতে আরেকবার জ্বলে উঠলেন লিওনেল মেসি। শুধু তাই নয় লিভারপুলের আক্রমণে ভাটা ফেলে এ ফরোয়ার্ড দেখালেন ম্যাজিক। করলেন জোড়া। শেষ পর্যন্ত তার নৈপুণ্যেই ইংলিশ জায়ান্টদের উড়িয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল বার্সেলোনা।

বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে লিভারপুলকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। দুটি গোল করেন মেসি। অন্যটি আসে লুইস সুয়ারেজের পা থেকে। ১৪ বছর আগে বার্সেলোনার জার্সিতে প্রথম জালের দেখা পেয়েছিলেন মেসি। সেই পথ ধরে বুধবার এ আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড কাতালানদের জার্সিতে পেয়ে গেলেন ৬০০ গোল।

ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণ করে বার্সেলোনা। তবে দ্রুতই গতিময় ফুটবল দিয়ে তাদের চাপে ফেলে লিভারপুল। অতিথিদের মোহাম্মদ সালাহ স্বাগতিকদের রক্ষণে ভীতি ছড়ায়। কিন্তু প্রথমার্ধে জালের দেখা পাননি তিনি। এদিকে সাদিও মানেও পারেননি কাঙ্ক্ষিত গোল।

বার্সেলোনার জার্সিতে বুধবার নিজেকে মেলে ধরেন ফিলিপে কৌতিনহো। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই তার রক্ষণচেরা পাসে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান ইভান রাকিতিচ। গোলে শট না নিয়ে ক্রোয়াট মিডফিল্ডার কাট ব্যাক করতে চেয়েছিলেন সুয়ারেসকে। দারুণ ব্লকে সেবার দলকে বাঁচান জোয়েল মাতিপ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বার্সেলোনা গোলের দেখা পায় ম্যাচের ২৬তম মিনিটে। জর্দি আলবার দারুণ ক্রসে স্লাইড করে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেন লুইস সুয়ারেজ। এরি কিছুক্ষণ পরই ব্যবধান বাড়াতে পারতো কাতালানরা। কিন্তু ৩২তম মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন কৌতিনহো।

\"\"
বিরতির পর সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে লিভারপুল। সুযোগও পেয়েছিল দলটি ম্যাচের ৪৭তম মিনিটে। কিন্তু সে সময় জেমস মিলনারের বুলেটগতির বাঁকানো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বার্সা টের স্টেগান। ৫৩তম মিনিটে কোনোমতে সালাহর শট ঠেকিয়ে আবারও বার্সেলোনার ত্রাতা বনে যান এ গোলরক্ষক।

লিভারপুলের একের পর এক আক্রমণ সামাল দিতে বিরতির পর কৌতিনহোর জায়গায় বার্সা কোচ মাঠে নামান নেলসন সেমেদোকে। কাজও হয় তাতে। ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল কাতালানরা। কিন্তু সে সময় মেসির নিখুঁত ক্রস থেকে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেলেও তালগোল পাকিয়ে শট নিতে পারেননি সেমেদো।

সুযোগ মিসের মাঝেই ঠিকই লিভারপুলের জাল খুঁজে নেন মেসি। সুয়ারেজের শট ক্রসবারে লেগে ফিরলে এগিয়ে এসে নিয়ন্ত্রণে নেন কিং লিও। সেই বল বুক দিয়ে নামিয়ে জালে পাঠান তিনি। এদিকে ম্যাচের ৮২তম মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রি-কিকে স্কোর লাইন ৩-০ করেন মেসি। এরআগে আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ডকে ফাবিনিয়ো ফাউল করেছিলেন। তাতে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পেয়েছিল বার্সেলোনা। যে সুযোগ মোটেও নষ্ট করেননি বার্সা অধিনায়ক।
\"\"

শেষ দিকে ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল লিভারপুল। কিন্তু বিপজ্জনক জায়গা থেকে নেয়া সালাহর শট ফিরে পোস্টে লেগে। এদিকে যোগ করা সময়ে উসমান ডেম্বেলে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও লিভারপুলের জালে কাতালানদের চার নম্বর পেরেকটি ঠুকে দিতে পারেননি তিনি। তারপরও অবশ্য স্বাগতিক কোন ক্ষতিই হয়নি। বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ভালভার্দের শিষ্যরা।

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে আগামী মঙ্গলবার অ্যানফিল্ডে লড়বে বার্সেলোনা-লিভারপুর। যে ম্যাচে কোনরকমে জিতলে বা ড্র করলেই ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত হবে বার্সার। অন্যদিকে শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে জায়গা পেতে লিভারপুলকে জিততে হবে বড় ব্যবধানে।

Scroll to Top