munajat

যে সময়ে দোয়া কবুল হয়

দোয়া আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে- আহ্বান, ডাকা, চাওয়া। মুমিন বান্দারা মহান আল্লাহর কাছে বিপদ-আপদ, ক্ষমার আশায় দুই হাত তুলে ধরেন। যখন কোনো বান্দা তার কাছে দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেন তখন তিনি তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা মুমিন, আয়াত, ৬০)

দোয়া কবুল হওয়ার প্রশান্তি অনেক বেশি। বিগলিত হৃদয়ে, তাসবিহ ও দরুদ শরিফ পাঠের মাধ্যমে দোয়া কবুলের সময়ে দোয়া করলে মহান আল্লাহ কবুল করে নেবেন। এজন্যই দোয়া কবুলের সময়কে কাজে লাগানো উচিত। দোয়া কবুলের মূল্যবান সময়গুলো হচ্ছে-

শেষ রাতে দোয়া কবুল হয়

কিছু মুহূর্ত আছে যখন মহান আল্লাহ দোয়া কবুল করেন। প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া কবুল হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি বলেন, প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ সবচেয়ে নিচের আসমানে নেমে আসেন। বলেন, কে আমাকে ডাকছো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার কাছে চাইছো, আমি তাকে তা দেব। কে আছো আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো।’ (মুসলিম: ১২৬৩)

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘শেষ রাতের যে কোনো সময় কোনো মুসলমানের এমনটা হয় না যে, সে পৃথিবী বা পরকালের জন্য মহান আল্লাহর কাছে কিছু চাইল আর তাকে তা দেয়া হলো না। আর এটা প্রতিটি রাতেই ঘটে।’ (মুসলিম: ১২৫৯)

নামাজের পর দোয়া কবুল হয়

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসুল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বলেন, রাতের শেষ সময়ে ও ফরজ নামাজের পরে (তিরমিজি: ৩৪২১)

নফল নামাজে সেজদার সময়েও দোয়া কবুল করা হয়। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে সময়টাতে বান্দা মহান আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদার সময়। তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি চাও।’ (মুসলিম: ৭৪৪)

বৃষ্টি ও আজানের সময় দোয়া কবুল হয়

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টির সময়ের দোয়া।’ (আবু দাউদ: ২১৭৮)

মহান আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুলের যে সুযোগ দিয়েছেন সেটা অনেক বড় প্রাপ্তি। আমাদের সেটা কাজে লাগানো উচিত। যারা সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সর্বাবস্থায় দোয়ার হস্ত সম্প্রসারিত করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের খালি হাত ফিরিয়ে দেন না।

জমজমের পানি পানের সময় দোয়া

জমজমের পানি বরকতময় পানি। এ পানি পানকারী ব্যক্তির জন্য ফকিহগণ কিছু আদব উল্লেখ করেছেন, কিবলামুখী হওয়া, বিসমিল্লাহ বলা, তিন শ্বাসে পান করা, পরিতৃপ্ত হওয়া, শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা ইত্যাদি। জমজমের পানি পান করার সময় একটি বড় কাজ হলো দোয়া করা। এ দোয়া মহান আল্লাহ কবুল করেন।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জমজমের পানি যে নিয়তে পান করা হবে তা কবুল হবে।’ (ইবনে মাজাহ: ৩০৫৩)

Scroll to Top