প্রয়োজনে কসম বা শপথ করা জায়েজ। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নামে কসম করা নাজায়েজ। এটি শিরক (আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা) এর সমতুল্য। হাদিসে এসেছে, ইবনু উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত অন্য কারও নামে শপথ করল, সে শিরক করল। (মেশকাত, হাদিস: ৩৪১৯)
তবে বর্তমান সময়ে কথায় কথায় মানুষকে কসম কাটতে দেখা যায়। কেউ কেউ তো পান থেকে চুন খসলেও অবলীলায় কসম কাটেন, যা কোনোভাবেই উচিত নয়। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি তার অনুসরণ করো না, যে বেশি বেশি কসম খায় আর যে (বারবার মিথ্যা কসম খাওয়ার কারণে মানুষের কাছে) লাঞ্ছিত।’ (সুরা আল-কলম, আয়াত: ১০)
আবার কোনোকিছুতে বিশ্বাসযোগ্যতা বোঝাতে অনেককে বাবা-মায়ের কসম কাটতেও দেখা যায়। এ ক্ষেত্রেও কঠোর নিষেধ রয়েছে। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) উমর ইবনু খাত্তার (রা.) কে কোনো বাহনের ওপর আরোহণ অবস্থায় পেলেন। ওইসময় তিনি তার বাবার নামে কসম করছিলেন। পরে রাসুল (সা.) বললেন, সাবধান! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পিতৃপুরুষদের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ যদি কসম করতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নতুবা চুপ থাকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৯১)
তবে প্রয়োজনে কসম কাটা জায়েজ থাকলেও কোনোভাবেই মিথ্যা কসম কাটা যাবে না। এ ক্ষেত্রে আখিরাতে ভয়ংকর শাস্তি রয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, এরা আখিরাতের কোনো অংশই পাবে না এবং আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না, বস্তুত তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা আল-ইমরান, আয়াত: ৭৭)
মিথ্যা কসম কাটা কবীরা গুনাহের অন্যতম। হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) সূত্রে মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কবীরা গুনাহসমূহের অন্যতম হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার নাফরমানী করা, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২১৯)