রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোটবেলা থেকেই অন্যের জন্য কল্যাণকামী ছিলেন। কারও বিপদ-আপদে সবার আগে হাজির থাকতেন তিনি। সমাজের অনেক বড় বড় সমস্যা যার জন্য যুদ্ধ বেধে যেত সেসব সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন তিনি।
তার এসব ভূমিকার অন্যতম একটি উদাহরণ হলো মক্কার বড় বড় নেতাদের ও তরুণদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল নামক সামাজিক নিরাপত্তামূলক সংগঠন গঠন করা। যাকে শান্তি সংঘ বলা হয়। এর উদ্দেশ্যসমূহ হলো,
১. দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা।
২. বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করা।
আরও পড়ুন: নবীজি (সা.) যে স্থানকে জান্নাতের বাগান বলেছেন
৩. অত্যাচারিতকে অত্যাচারীর হাত থেকে রক্ষা করা।
৪. দুর্বল, অসহায় ও এতিমদের সাহায্য করা।
৫. বিদেশি বণিকদের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৬. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় ও অবিচার অবসানের চেষ্টা করা।
আমরা অনেকেই জানি, শুধু সামাজিক কিছু সমস্যা নিরসনের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ (সা.) হিলফুল ফুজুল নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু যে তথ্যটির তেমন প্রচার নেই, তা হলো হিলফুল ফুজুল প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কারণগুলোর অন্যতম ছিল আরবজুড়ে ব্যবসায়িক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সে সময়ে দূরদূরান্তে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বাণিজ্য কাফেলা সফর করত। কাফেলার সঙ্গে পণ্যসহ নগদ অর্থ থাকত। ব্যবসায়ী কাফেলা লুটপাট করার জন্য আরবের এক শ্রেণির লুটেরা ওঁৎ পেতে থাকত। এ ছাড়া জুলুম-নির্যাতনের অবাধ চর্চায় নিমজ্জিত সেকালের অনেক ধনী বা বড় বড় ব্যবসায়ী ও সর্দাররা ছোট ব্যবসায়ীদের নানাভাবে ঠকাত।
হিলফুল ফুজুল ছিল একটি শান্তিসংঘ। নবুয়তের ১৫ বছর আগে মাত্র ২৫ বছর বয়সে এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠাকেন্দ্রিক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন রসুলুল্লাহ (সা.)। হারবুল ফিজার বা ‘অন্যায় সমর’ নামে একটি যুদ্ধের ভয়াবহ পরিণামের পরিপ্রেক্ষিতে এমন একটি সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজন সামনে এসেছিল। এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে ব্যবসায়িক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল।