রমজান ও ইদুল ফিতরের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হলো সদকাতুল ফিতর। সম্পদশালী মুসলমানদের পাশাপাশি দরিদ্র মুসলামানরাও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারে, সে জন্য আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যা ঈদের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়। এই দানকে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়।
ইদুল ফিতরের দিন সকালে যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদ অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও ব্যবসাপণ্য, সৌখিন আসবাবপত্র, বাসগৃহ ছাড়া বাড়িঘর বা জমিজমার মালিক থাকে, তার ওপর তার নিজের পক্ষ থেকে এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব হয়।
যে ব্যক্তির ওপর জাকাত ওয়াজিব তার ওপর সদকাতুল ফিতর আদায় করাও ওয়াজিব। জাকাত ওয়াজিব নয় এমন অনেকের ওপরও সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। জাকাতের নেসাব হিসাব করার ক্ষেত্রে ঘরের আসবাবপত্র ও স্থবর সম্পত্তি অর্থাৎ জমিজমা, ঘরবাড়ি ইত্যাদি হিসাবে ধরা হয় না। কিন্তু সদকাতুল ফিতরের নেসাব হিসাব করার ক্ষেত্রে ঘরের অত্যাবশ্যকীয় আসবাব ছাড়া অন্যান্য সৌখিন আসবাব-পত্র, খালি পড়ে থাকা বা ভাড়া দেওয়া জমিজমা ও ঘরবাড়িও হিসাবে ধরা হয়।
হাদিসে নবিজি (সা.) উন্নত মানের খেজুর, মধ্যম মানের খেজুর, কিসমিস, পনির ও গম -এই পাঁচটি খাদ্যদ্রব্যের যে কোনো একটির মাধ্যমে সদকাতুল ফিতর আদায় করার অনুমতি দিয়েছেন। এগুলোর মূল্য অনুযায়ী সদকাতুল ফিতরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারিত হয়। এ বছর (১৪৪৫ হিজরি) বাংলাদেশ সরকারের সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।