‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ অর্থ ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই, কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই।’ অর্থাৎ মানুষের সক্ষমতা, শক্তি ও সাহস যত বেশিই থাকুক না কেন, আল্লাহর তাআলা না চাইলে মানুষ কিছুই করতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা শক্তি ও তাওফিক না দিলে মানুষ কোনো ভালো কাজ করতে সক্ষম নয়, কোনো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতেও সক্ষম নয়।
যখন মানুষ কোনো বিপদে পড়ে বা বিপদে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়, কোনো গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা তৈরি হয় অথবা কোনো রকম বিপদাপদ ছাড়াই আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আশ্রয় প্রার্থনা করার জন্য দোয়াটি পড়া যায়। আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) আমাকে বলেছেন, বলো ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ এটি জান্নাতের একটি ধনভান্ডার। (সহিহ বুখারি: ৭৩৮৬) আরও বেশ কিছু হাদিসে এ দোয়াটিকে জান্নাতের ধনভাণ্ডার ও দরজা বলা হয়েছে।
আনাস ইবন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে যাচ্ছি, আল্লাহর ওপর ভরসা করছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই, কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই’ পাঠ করে, তাকে (ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে) বলা হয়, তুমি যথেষ্ট করে নিলে ও বেঁচে গেলে, তোমার থেকে শয়তান দুর হয়ে গেল। (সুনানে তিরমিজি: ৩৪২৬)
আজানের জবাবে অন্যান্য বাক্যগুলোর জবাবে ওই বাক্যগুলোই বলতে হয়। কিন্তু মুআজ্জিন যখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলে, এর জবাবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলতে হয়। সহিহ মুসলিমে ওমর (রা.) থেকে এবং সহিহ বুখারিতে মুয়াবিয়া (রা.) থেকে এভাবেই আজানের জবাব বর্ণিত হয়েছে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করে সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, যেহেতু আজানের অন্যান্য বাক্যগুলো আল্লাহর জিকির, তাই সেগুলোর জবাব দেওয়ার সময় ওই বাক্যগুলোই বলতে হয়। তাতে মুআজ্জিন ও শ্রোতা উভয়ই সওয়াব লাভ করে। আর ‘হাইয়া আলাস সালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলে মুআজ্জিন যেহেতু সবাইকে নামাজের দিকে ডাকছে, তাই শ্রোতা বলবে, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই, কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই’। অর্থাৎ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান। আল্লাহর সাহায্য ও তাওফিক ছাড়া এ আহ্বানে সাড়া দেওয়ার সাধ্য আমার নেই।