নিবন্ধনের সময় তিন দফা বাড়িয়েও চলতি বছর হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে কোটার ৫৮ শতাংশ অর্থাৎ ৭৪ হাজার ৮৩ জনের আসন খালি রেখেই হজ নিবন্ধন শেষ করেছে সরকার।
গত বৃহস্পতিবার রাত আটটায় চলতি মৌসুমের হজের নিবন্ধনের সময় শেষ হয়।
এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজ করার অনুমতি থাকলেও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধন করেছেন ৫৩ হাজার ১১৫ জন। সৌদির সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী এখনো কোটা ফাঁকা রয়েছে ৭৪ হাজার ৮৩টি।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, হজের নিবন্ধন আজকেই শেষ। নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা কোটা সারেন্ডার করে দেব। আগামী সপ্তাহে আমরা সৌদি আরবকে হজযাত্রীর সংখ্যা জানিয়ে দেব।
আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, নিবন্ধনের সময় বাড়ালে মিনায় আর জায়গাই পাব না। পরে সবাই গালাগালি করবে, সরকার আমাদের দূরে রেখেছে, কষ্ট দিয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া মিনায় জায়গা বুক করে ফেলেছে। আমরাই একমাত্র দেশ যারা এখনো হজযাত্রীদের সংখ্যা জানাতে পারিনি।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয়। প্রথমে নিবন্ধনের সময় ছিল ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। হজযাত্রীদের সাড়া না পাওয়ায় সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ১৮ জানুয়ারি করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫৩ হাজার ১১৫ জন হজযাত্রী প্রাক নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৮০২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৯ হাজার ৩১৩ জন। সেই অনুযায়ী কোটার ৪২ শতাংশ হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন। এখনো ৭৪ হাজার ৮৩ জন নিবন্ধন করেননি। অর্থাৎ কোটার ৫৮ শতাংশ খালি রয়েছে।
হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছর নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় আটবার সময় বাড়ানো হয়। এরপরও শেষ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি কোটা ফেরত যায়। হজ প্যাকেজের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করায় সাধারণ হজযাত্রীদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনে সাড়া মিলছে না বলে অনেকে মনে করছেন।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। অপরদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য ১ লাখ ৪ হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে, তবুও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।