সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত, মুসলিমদের কাঁধে হিন্দু পণ্ডিতের লাশ

মানুষ মানুষের জন্য, মানবধর্ম সবচেয়ে বড় ধর্ম। এই কথা গুলোর সত্যতা প্রমাণ করে দিল সাম্প্রতিককালের এক ঘটনা। প্রচন্ড তুষারপাতে ধবধবে সাদা হয়ে গিয়েছে ভারতের কাশ্মীর। সূর্যের বিন্দুমাত্রও দেখা নেই, তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ নিম্নমুখী। তুষারপাতের কারণে বরফের রাস্তায় হাঁটতে গেলে পা ঢুকে যাচ্ছে, কোমড় সমান বরফ ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো এলাকা, কিছুই দেখা যাচ্ছে না চারিদিক। এমনই এককঠিন পরিস্থিতিতে হিন্দু পণ্ডিত পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়ালেন তাদের মুসলিম প্রতিবেশীরা।

১০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন মুসলিমরা কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিতের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে। এমনকি সৎকারের কাজেও হাত লাগাতে পিছপা হয়নি তারা। এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার মুসলিমদের প্রশংসা চলছে সারা ভারতজুড়ে।

হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কাশ্মীরি পন্ডিত ভাস্কর নাথ। জানা যায়, কিডনি ফেল করেই মৃত্যু ওই পন্ডিতের। মৃত্যুকালে ওই পন্ডিতের বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। প্রচন্ড তুষারপাতের কারণে রাস্তাঘাট অচল হয়ে যায়। শ্রীনগর থেকে পারগোচি যাওয়ার পথে আটকে যায় তাদের গাড়ি। সেই সময় গাড়ির চালক জানায়, গাড়ি আর এগোবে না। পণ্ডিতের শবদেহ যথাস্থানে নিয়ে যেতে মানুষের কাঁধ এর মাধ্যমে নেয়া লাগবে।

মুসলিম প্রতিবেশীরাই সেই সময় সাহায্যে এগিয়ে আসেন। এই ঘটনা এক অনাবিল তৃপ্তি জোগাচ্ছে দেশজুড়ে। কারণ, নয়ের দশকে কাশ্মীর ভূখণ্ড থেকে কয়েক লক্ষ কাশ্মীরি পণ্ডিতকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চলত ধর্ষণ, গণহত্যার মতো ঘটনা। ৬ লক্ষ থেকে কাশ্মীরে পণ্ডিতে জনসংখ্যা কমতে কমতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজারে। ভারতজুড়ে সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছে এই ঘটনা।