চৌদ্দ\’শ বছর আগে মহামারী ভাইরাস সম্বন্ধে কুরআন!

বিজ্ঞান যেখানে প্রাণঘাতী করোনার প্রতিষেধক আবিস্কারে কিংকর্তব্যবিমূঢ়, সেখানে চৌদ্দ\’শ বছর আগেই পবিত্র কুরআনে ভাইরাস সম্বন্ধে সুস্পষ্ট সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, তারপর আমি তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছি এক ঝঞ্ঝা-বায়ু এবং এক বাহিনী। এমন এক বাহিনী যা তোমরা চোখে দেখতে পাওনি (সূরা আহযাব ৯-৯)।

তারপর আমি তাদের ওপর রোগব্যাধি, অভাব, দারিদ্র্য, ক্ষুধা চাপিয়ে দেই, যেন তারা আমার কাছে নম্রতাসহ নতি স্বীকার কর (সূরা আনহাম ৪২-৪২)। তারপর (এই অবিচারমূলক জুলুমকার্য করার পর) তাদের বিরুদ্ধে আমি আকাশ থেকে কোন সেনাদল পাঠাইনি। পাঠানোর কোনো প্রয়োজন‌ও আমার ছিল না। শুধু একটা বিস্ফোরণের শব্দ হলো, আর সহসা তারা সব নিস্তব্ধ হয়ে গেল (মৃত লাশ হয়ে গেল) সূরা ইয়াসিন ২৮-২৯)।

শেষ পর্যন্ত আমি এই জাতিকে পোকামাকড় বা পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ, রক্ত, প্লাবন ইত্যাদি দ্বারা শাস্তি দিয়ে ক্লিষ্ট করি (সূরা আরাফ ১৩৩-১৩৩)। নিশ্চয়ই আল্লাহ মশা কিংবা এর চাইতেও তুচ্ছ বিষয় (ভাইরাস বা জীবাণু) দিয়ে উদাহরণ বা তাঁর নিদর্শন প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না (সূরা বাকারা ২৬-২৬/)।

অধিবাসীদেরকে আমি দুঃখ, দারিদ্র্য, রোগব্যাধি ও অভাব-অনটন দ্বারা আক্রান্ত করে থাকি । উদ্দেশ্য হলো তারা যেন, নম্র এবং বিনয়ী হয় (সূরা আরাফ ৯৪-৯৪)। তোমার রবের সেনাদল বা সেনাবাহিনী (কত প্রকৃতির বা কত রূপের কিংবা কত ধরনের) তা শুধু তিনিই জানেন (সূরা মুদ্দাসিসর ৩১-৩১)।

তুমি তাদের বলো যে, আল্লাহ তোমাদের ঊর্ধ্বলোক হতে বা উপর থেকে এবং তোমাদের পায়ের নিচ হতে শাস্তি বা বিপদ পাঠাতে পূর্ণ সক্ষম (সূরা আনআম ৬৫-৬৫)। তারপর আমার ভূমিকম্প তাদের গ্রাস করে ফেলল। ফলে তারা তাদের নিজেদের গৃহেই মৃত অবস্থায় উল্টো হয়ে পড়ে রইল (সূরা আ\’রাফ ৯১-৯১)। তারপর আমি এই লূত সম্প্রদায়ের ওপর প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বর্ষণকারী এক প্রচণ্ড ঘূর্ণিবায়ু সূরা (কামা\’র -৩৪)।

অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্বে বহুজাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যখন তারা সীমা অতিক্রম করেছিল (সূরা ইউনুস ১৩-১৩)। তারপর প্রবল বন্যার পানি তৈরি করলাম এবং ফসলি জমিগুলো পরিবর্তন করে দিলাম। অকৃতজ্ঞ ও অহংকারী ছাড়া এমন শাস্তি আমি কাউকে দেই না (সূরা সাবা ১৬-১৫)।

নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিটি বস্তুর ওপর (অর্থাৎ আরশ,পঙ্গপাল কিংবা ভাইরাস) সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান, সব‌ই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন (সূরা বাকারা ১৪৮-১৪৮)।

আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা, জান-মালের ক্ষতি ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে পরীক্ষা করব। তবে তুমি ধৈর্যশীলদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও (সূরা বাকারা ১৫৫-১৫৫)। আর আমার বাহিনীই হয় বিজয়ী (আমার পরিকল্পনা পূর্ণ করে) (সূরা সাফফাত ১৭৩-১৭৩)।

অতঃপর যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের উপদেশ এবং দিক-নির্দেশনা দেওয়া হলো, তারা তা ভুলে গেল (আল্লাহর কথাকে তুচ্ছ ভেবে প্রত্যাখ্যান করল) তাদের এই সীমালঙ্ঘনের পর আমি তাদের জন্যে প্রতিটি কল্যাণকর বস্তুর দরজা খুলে দিলাম অর্থাৎ তাদের জন্যে ভোগ বিলাসিতা, খাদ্য সরঞ্জাম, প্রত্যেক সেক্টরে সফলতা, উন্নতি এবং উন্নয়ন বৃদ্ধির দরজাসমূহ খুলে দিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন তারা আমার দানকৃত কল্যাণকর বস্তুসমূহ পাওয়ার পর আনন্দিত, উল্লসিত এবং গর্বিত হয়ে উঠল, তারপর হঠাৎ একদিন আমি সমস্ত কল্যাণকর বস্তুর দরজাসমূহ বা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দরজাসমূহ বন্ধ করে দিলাম। আর তারা সেই অবস্থায় হতাশ হয়ে পড়ল। তারপর এই অত্যাচারী সম্প্রদায়ের মূল শিকড় কর্তিত হয়ে গেল এবং সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্যেই, যিনি বিশ্বজগতের কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনকারী বা সবকিছুর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণকারী ‘রব’ (সূরা আনআম ৪৪-৪৫)।

নিশ্চয়ই আমিই হলাম ‘আল্লাহ’। অতএব আমার আইনের অধীনে থাকো (সূরা ত্বা\’হা ১৪-১৪)। তোমরা কি ভাবনা মুক্ত হয়ে গিয়েছো যে, আকাশে যিনি আছেন, তিনি তোমাদেরসহ ভূমিকে ধসিয়ে দেবেন না? অথবা তোমাদের ভূগর্ভের বিলীন করে দেবেন না? এমন অবস্থায় যে ভূভাগ তথা জমিন (আল্লাহর নির্দেশে) আকস্মিকভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে বা ভূমিকম্পকে চলমান করে দেওয়া হবে (সূরা মুলক ১৬-১৭/১৬)।

নাকি তোমরা ভাবনামুক্ত হয়ে গিয়েছ যে, আকাশে যিনি আছেন, তিনি তোমাদের ওপর কংকরবর্ষী ঝঞ্ঝা-বৃষ্টি কিংবা প্রস্তর-বৃষ্টি বর্ষণ করার হুকুম দেবেন না? (যদি আমি এমন করার হুকুম করি) তখন তোমরা জানতে পারবে বা উপলব্ধি করবে, কেমন ছিল আমার সতর্কবাণীর পথ-নির্দেশ (সূরা মুলক ১৬-১৭-১৭)।

তারপর আমি ফেরাউনের অনুসারিদেরকে কয়েক বছর পর্যন্ত দুর্ভিক্ষে রেখেছিলাম এবং অজন্ম ও ফসলহানি দ্বারা বিপন্ন করেছিলাম। (সংকটাপন্ন এবং বিপদগ্রস্ত অবস্থায় রেখেছিলাম) উদ্দেশ্য ছিল, তারা হয়তো আমার পথ-নির্দেশ গ্রহণ করবে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস আনয়ন করবে। (আমার আধিপত্য স্বীকার করে নেবে) (সূরা আ\’রাফ ১৩০-১৩০)।

জনপদের অধিবাসীরা কি ভাবনামুক্ত হয়ে গিয়েছে সেই আল্লাহর বিষয়ে যে, তিনি তাদের ওপর ঘুমন্ত অবস্থায় শাস্তি পাঠাবেন না? যে শাস্তি তাদের গ্রাস করে ফেলবে! নাকি জনপদের অধিবাসীরা চিন্তামুক্ত হয়ে গিয়েছে এই বিষয়ে যে, আমি তাদের ওপর শাস্তি পাঠাব না, এমন অবস্থায় যে যখন তারা আমোদ-প্রমোদে লিপ্ত ছিল? (সূরা আরাফ ৯৭-৯৮)।

আপনি কি দেখেননি, আপনার রব আদ বংশের ইরাম গোত্রের সাথে কি আচরণ করেছিলেন? যাদের দৈহিক গঠন ছিল, স্তম্ভ এবং খুঁটির ন্যায় দীর্ঘ এবং তাদের এত শক্তি ও বলবীর দেওয়া হয়েছিল যে, সারা বিশ্বের শহরসমূহে অন্য কোনো মানবগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়নি এবং সামুদ গোত্রকে যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করত এবং বহু সৈন্যবাহিনীর অধিপতি ফেরাউনের সাথে, যারা দেশের সীমাসমূহ লঙ্ঘন করেছিল। অতঃপর সেখানে বিস্তর অশান্তি সৃষ্টি করেছিল। তারপর আপনার রব তাদের ওপর শাস্তির কষাঘাত করলেন। নিশ্চয়ই আপনার রব প্রতিটি বিষয়ের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখেন (সূরা ফজর্ ৬-১৪)। আমি জালিমদের সুযোগ দেই বা বেঁচে থাকার সময় দে‌ই, তাদের পাপকে পাকাপোক্ত করার জন্য (সূরা আল-ইমরান ১৭৮-১৭৮)।

Scroll to Top