দামের কারণ ছাড়াও যে কারণে মাংস খেতে পারছে না দরিদ্র মানুষ, তা হলো আধা কেজির কমে মাংস বাজারে বিক্রি না করা। দুই সদস্যের পরিবারে এক বেলার জন্য দেড় থেকে দু’শ গ্রাম মাংস যথেষ্ট হলেও বাংলাদেশে এই পরিমাণ মাংস কেনাবেচার প্রচলন নেই। তবে রোজার মাসে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করতে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সাধ আছে, কিন্তু সাধ্য না থাকায় রংপুর অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ গরুর মাংস কিনতে পারছেন না। সর্বনিম্ন আধা কেজি মাংসের দাম সাড়ে ৩০০ টাকা। এই পরিমাণ মাংস কিনলে একদিনের রোজগারের প্রায় পুরোটাই চলে যায়। তাই বেশিরভাগ মানুষ মাংসের দোকানের ধারের কাছেও ভিড়ছেন না।
তবে পরিবারের সদস্যদের আবদার যারা ফেলতে পারছেন না, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো গরুর মাথা, কলিজা, ফুসফুস, ভুরি কিনে ফিরছেন। রংপুরের বাজারে গরুর মাংসের কেজি সাতশ’ টাকা।
স্থানীয় প্রবীণরা বলছেন, এক সময় এক পোয়া-আধ পোয়া মাংস বিক্রি হতো। কিন্তু ফ্রিজের প্রচলন শুরু হওয়ার পর আধা কেজির নিচে মাংস বিক্রির প্রচলন উঠে গেছে। এখন বেশি পরিমাণে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন অনেকেই। বিশেষত কর্মব্যস্ত স্বচ্ছল পরিবারের মানুষ একবারে বেশি করে মাংস কিনে নিয়ে বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষণ করছেন। কিন্তু দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ পারছেন না।
রংপুর সিটির মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষ, বিশেষত গরিব মানুষ তাদের শিশুদের মুখে এক মাসেও একবার মাংস তুলে দিতে পারছেন না। রোজার মাস শুরু হওয়ার আগে মহানগরীর সব মাংস ব্যবসায়ীকে ডেকে মানুষের সাধ্য অনুযায়ী মাংস কেনা-বেচার ব্যবস্থা করবো।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে না থাকলেও প্রতিবেশী ভারতে কিন্তু একশ’ বা দুইশ’ গ্রাম মাংস বিক্রি হয়। এটি করতে পারলে দরিদ্র মানুষ মাংস খেতে পারবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্য বলছে, রংপুর মহানগরীর ছোটবড় ২২টি বাজার ছাড়াও পাড়া-মহল্লার মোড়ে প্রতিদিন বিক্রি হয় দেড় থেকে দুশ’ গরুর মাংস।