রংপুরে নগদ অর্থ, ডেউটিন ও শিশুখাদ্য পেল ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০ পরিবার

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার ৭০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ, ঢেউটিন ও চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় বন্যার্ত ৬০টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয় শিশুখাদ্য হিসেবে পুষ্টিকর খাবার। আজ রবিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

\’গ্রামের শেষ বাড়িটিও তিস্তার পেটে\’ শিরোনামে গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসলে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রতিবছর তিস্তা নদীর ভাঙন ও বন্যার কারণে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। অনেকে মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে পেলেও বেশীর ভাগ লোকজন খোলা আকাশের নিচে ও ঝুঁপড়ি ঘর তুলে মানবেতর জীবন যাপন করেন। ছাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামটি তিন বছর আগে ভাঙনের কবলে পড়ে।

ওই গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতি ছিল। এ ছাড়া তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে দক্ষিণ গাবুড়ার আগে চারটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ছাওলা ইউনিয়নের পূর্ব শিবদেব চর, আমিনপাড়া, বৈরাগীপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের পাকা মসজিদ, হাট-বাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনাও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি মাসেই শতাধিক বাড়ি চলে গেছে নদীগর্ভে। বাড়িঘর হারিয়ে ভাঙনের শিকার ব্যক্তিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। গরু-ছাগল নিয়ে বসবাসের জন্য একটু ঠাঁই খুঁজতে তারা এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর খেয়ে, না খেয়ে দিন কাটছে।

চলতি মাসে নদী ভাঙনের শিকার ৪০টি পরিবারের মাঝে চেকের মাধ্যমে ৫ হাজার করে টাকা ও ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০টি পরিবারের মাঝে এক বান্ডিল করে টিন ও নগদ তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ সময় বন্যার্ত ৬০টি পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমীন প্রধান উপস্থিত থেকে এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবার রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হাকিম প্রমুখ। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাওলা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভাঙন ও বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন।

Scroll to Top