সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নুরজাহান নামে সুবিধাভোগী এক নারীর বয়স্কভাতার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এমনকি ভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই নারীর কাছে আগেই ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ওই ইউপি সদস্য।
উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড (জামাল) মেম্বার নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী ওই নারী একই ওয়ার্ডের জামাল গ্রামের মৃত আলী মোহাম্মদের স্ত্রী।
জানা গেছে, ওই বৃদ্ধা এক বছর আগে আগে বয়স্কভাতার কার্ড করার জন্য ইউপি সদস্য নুরুজ্জামানের কাছে ৬ হাজার টাকা দেন। এরপর ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ভাতার তালিকা অন্তর্ভুক্ত হয়। গত ১৮ মার্চ সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ভাতার বই ইস্যু হলেও তা গোপন রাখেন ইউপি সদস্য। পরে ওই সুবিধাভোগীর নামের বরাদ্দকৃত সহায়তার টাকা নিজেই তুলে আত্মসাৎ করেন মেম্বার। ভাতার নাম হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে যান ভুক্তভোগী বৃদ্ধা নুরজাহান বেওয়া। পরে গত ঈদের আগে সুবিধাভোগীর ভাতা প্রাপ্তির বই ফেরত দেন মেম্বার।
ভাতার টাকা তুলতে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন ওই বৃদ্ধার নামে বরাদ্দ হওয়া দুই দফায় উত্তোলন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে ওই নারীর নামে উত্তোলন করা ভাতার ৬ হাজার টাকার মধ্যে সাড়ে চার হাজার ফেরত দিয়ে আসে মেম্বার নুরুজ্জামান। বাকি দেড় হাজার টাকা এখনো ফেরত দেননি। এরপর সেই ইউপি সদস্য ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি কাউকে না বলতে হুমকি দিয়ে চলে যান।
ভুক্তভোগী ওই নারীর ছেলে নুরুজ্জামান বলেন, গত বছর আমার মায়ে বয়স্কভাতার কার্ড করার জন্য মেম্বারকে ৬ হাজার টাকা দেই। কিন্তু মায়ের নামে ভাতার কার্ড হলেও মেম্বার তা গোপন রাখে। পরে ভাতার তালিকায় আমার মায়ের নাম জানতে পেরে মেম্বারকে বললে তিনি আমাকে বইটা ফেরত দেয়। আমি মাকে নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি ভাতার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পরে চেয়ারম্যানকে জানালে আজকে এসে ভাতার ৬ হাজার টাকার মধ্যে সাড়ে চার হাজার ফেরত দিয়ে যায়।
ওই বৃদ্ধা জানান, আমি গ্রামে গ্রামে রুটি বিক্রি করে সংসার চালাই। কষ্ট করে জমানো ৬ হাজার টাকা দেই ভাতার কার্ড করার জন্য। মেম্বার আমাক ৬/৭ মাস ঘুরি নিয়ে বেড়ার পর ঈদের আগে ভাতার বই দেয়। পরে ভাতার টাকা তুলতে গিয়ে শুনি মেম্বার টাকা তুলে আত্মসাৎ করছে। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে সে আজ এসে সাড়ে চার হাজার টাকা ফেরত দেয়। ওই মেম্বার আমার সাথে যে অন্যায় করছে আমি তার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী লুতফুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।