গরু খামারির একটাই লক্ষ্য থাকে। আর সেটা হল ঈদুল আযহা। আর হাতে গুণা কয়েকদিন পর ঈদুল আযহা । তবে যে লক্ষ্যে খামারিরা গরু লালন-পালন করেন তা যদি হাসিল করতে না পারেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হবেন। যেমনটা এবারও দেখা যায়। যে ঈদুল আযহায় তারা বাড়তি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশে প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের ৬ মাস আগ থেকেই শুরু করে কোরবানির গরু পালন, সেই তারাই এবার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের আশা হয়ে যায় নিরাশ । এমনই চিত্র দেখা গেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাশী হাটে।
সেই হাটের গরু বিক্রেতা আবেদ আলী বলেন, ছয় মাস হল ৪টি কোরবানির গরু লালন-পালন করেছি লাভের আশায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি গরু বিক্রি করতে পারি নাই। বার বার গরু ফিরে নিয়ে বাড়িতে যাই। লালন-পালন করতে যা খরচ হয়েছে বিক্রি করলে সেটাও পাবো না। একদিকে পাইকার নাই হাটে। অন্যদিকে ক্রেতার সংখ্যাও অনেক কম। যেন বন্যার পানিতে সব ভেসে গেছে। আক্ষেপ করে এই খামারি বলেন, ‘জীবনে আর কোরবানির গরু পালন করবো না।’
আবেদ আলী বলেন, আজ সকাল থেকে বিকেল হয়ে গেল এ পর্যন্ত একটা গরু বিক্রি করতে পারি নাই।
আরেক বিক্রেতা আলম বলেন, এভাবে যদি প্রতি বছর আমরা লোকসানে পড়ি তাহলে গরু পালন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের এই হাটে পাইকাররা বেশি আসে। কিন্তু এবার ভারতীয় গরু বেশি আমদানি হওয়ার কারণে পাইকাররা গরু কিনছে না। এবার আমাদের মূলধন উঠবে না।
এদিকে প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রায় ১ লাখ ৬৯ হাজার গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলার প্রায় ১ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা পূরণ করার কথা থাকলেও বাইরে যাচ্ছে না। কারণ পাইকাররা গরু কিনছে না।
পাইকার আলী হোসেন বলেন, গত বছর ভারত থেকে গরু না আসায় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকার কারণে পর পর তিন বছর ভালো দাম পেয়েছিলেন খামারিরা। এবার ভারত থেকে অধিক হারে গরু আসায় আমরা গরু কিনতে সাহস পাচ্ছি না। একারণে গরুতে ভালো লাভ করতে পারছে না গরু খামারি ও গৃহস্থরা।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হারুন-অর রশিদ জানান, জেলায় প্রায় ২৭ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ ডেইরি খামার রয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় প্রতিটি বাড়িতেও ৪/৫টি করে ষাড় গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জেলায় প্রায় ১ লাখ ৬৯ হাজার গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
জেলার প্রায় ১ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ৬৯ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা পূরণ করবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি