অন্তঃসত্ত্বাকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী আটক

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় যৌতুক না পাওয়ায় রুকসানা খাতুন (৩০) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে তার স্বামী। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী আবদুল হামিদকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলার কামারখন্দ উপজেলার জামতৈলে ইউনিয়নের কুড়া উদয়পুর থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে শুক্রবার রাতে ওই নারীকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নিহত রুকসানা কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিয়ারা গ্রামের দেলাল হোসেনের মেয়ে।

জামতৈল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল গনি জানান, ১৩ বছর আগে কুড়া উদয়পুর গ্রামের সবদের আলীর ছেলে আবদুল হামিদের সঙ্গে একই উপজেলার বিয়ারা গ্রামের দেলাল হোসেনের মেয়ে রুকসানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি মেয়ের জন্ম হয়। এর কিছুদিন পর স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করেন স্বামী আবদুল হামিদ। যৌতুকের টাকা দিতে স্ত্রীর পরিবার অস্বীকার করায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।

নিহতের শরীরে আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে দাবি করে ইউপি সদস্য আরো জানান, এই টাকা দেয়া-নেয়া নিয়ে এলাকায় একাধিবার মুরুব্বিরা সালিশ বৈঠকও করেন। কিন্তু বিষয়টির সুরাহা হয়নি।

এ নিয়ে ঝগড়ায় গতকাল শুক্রবার রাতে নিজ ঘরে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুকসানাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে পাষণ্ড স্বামী। পরে স্ত্রীর লাশ ঘরে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা হিসেবে এলাকায় প্রচারণা চালান আবদুল হামিদ।

নিহতের বাবা দেলাল হোসেন জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার জামাতা আবদুল হামিদ যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা দিতে চাপ দিতে থাকে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই মাঝেমধ্যে মেয়েকে মারপিট করত সে। এ নিয়ে এলাকার মুরুব্বিদের নিয়ে কয়েকবার দরবারও হয়েছে। তবুও হামিদের মার থেকে রক্ষা পায়নি তার মেয়ে।

দেলাল হোসেনের দাবি, শুক্রবার রাতে তার মেয়েকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে আবদুল হামিদ।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়দা জানান, নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে মামলা করবেন বলে ওসি আরো জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ৪ নভেম্বর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে