বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায়ও সাতজনের মৃত্যু হয়েছিল।
এছাড়া নতুনভাবে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২১৩ জন। মৃতরা সবাই রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল থেকে বুধবার (২ জুন) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যে সাতজন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পাঁচজনই করোনা পজিটিভ ছিলেন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন দুই জন। মরদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনজন ও রাজশাহীর তিনজন ও নাটোরের একজন রয়েছেন। এ নিয়ে গত আটদিনে রাজাশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে মোট ৬৯ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে ৩৭ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। বাকি ৩২ জন করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ২২০ জন। এর মধ্য গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ২১ জন। তার মধ্যে চাঁপাইবাবগঞ্জের ৯ জন, রাজশাহীর ৯ জন, এছাড়া নাটোর, জয়পুরহাট ও পাবনার ১ জন করে ভর্তি আছেন।
এদিকে, যতই দিন যাচ্ছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ততই করোনাজনিত রোগীর চাপ বাড়ছে। আর সব সব রোগীর মধ্যেই অক্সিজেনের চাহিদা দেখা দিয়েছে।
রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কিংবা উপসর্গ নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে আসছেন তাদের প্রায় সবার অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। হাসপাতালে যেকটি ওয়ার্ডে পাইপলাইনের মাধ্যমে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ছিল, সেগুলো রোগীতে ভর্তি। এখন বারান্দা এবং বিছানায় রোগী রাখার প্রস্তুতি চলছে। বেড ছাড়াও এখানে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায় কী না সে ব্যাপারেও পরিকল্পনা চলছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউ এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে তারা পার্থক্য পাচ্ছেন। আগে সব করোনা রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হতো না। কিন্তু এখন অন্তত ভর্তির সময় শতভাগ রোগীরই অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হচ্ছে। তবে ২/৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অনেকের আর লাগছে না। কিন্তু ভর্তির শুরুতেই যে সবার অক্সিজেন লাগছে এটা সত্যিই ভীতিকর। ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক।