সিরাগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ফুফুকে নিয়ে উধাও হয়েছে মাহমুদুল তালুকদার (২৫) নামে এক যুবক। মেয়েটি যুবকের রক্তের সম্পর্কিত আপন ফুফু। বিগত ২০ দিন ধরে তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ঘটনাটি ঘটছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের খাষচর জামালপুর গ্রামে। উধাও হয়ে যাওয়া মাহমুদুল তালুকদার অই গ্রামের শহিদুল তালুকদারের ছেলে।
এ ঘটনার পর এলাকায় একটি চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, হয়ত প্রেমের টানে এমন কান্ড ঘটিয়েছে এই কপোত-কপোতি। জানা গেছে, ইতিমধ্যে এরা দুজন কোর্টের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সম্ভান্ত পরিবাবের ছেলে-মেয়ের এমন কাজ মেনে নিতে পারছেন না অনেকই। কেউ কেউ বলছে সামাজিকতা বলে একটা কথা আছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ছেলে-মেয়েরা এসব ভুলে যাচ্ছে নাকি। তাই বলে রক্তের সম্পর্কিত ফুফুকে নিয়ে পলায়ন অতঃপর বিয়ে করা এসব সত্যিই মানা যায় না।
উল্লাপাড়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন হোসেন এ বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় চলতি মাসের ১৩ অক্টোবর মেয়ের বড় ভাই মানছুর রহমান বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ দায়রা জজ আদালতে অই যুবক সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এরা হলেন, ছেলে মাহমুদুল তালুকদার (২৫), ছেলের বাবা শহিদুল তালুকদার (৫০), মামা মোহাম্মাদ আলী (৩৫) ও উকিল নানা আশরাফ আলী তালুকদার (৬৫)।
এই মামলার ভিত্তিতে ছেলে ও মেয়েকে গ্রেফতাররের চেষ্টা চলছে।
মামলার তদন্তকারী এ পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, মেয়ের পরিবারের অভিযোগ গত ২৪ সেপ্টেম্বর মাহমুদুল তালুকদার মেয়েকে তার বাড়িতে থেকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এসময় মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যাতে সাহায্য করে ছেলের বাবা, মামা ও নানা। এরপর থেকে এই যুগলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়েটি ছেলের সম্পর্কে ফুফু হয়। তাদের মধ্যে কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিলো না। এমনকি তাদের বিয়েও হয় নি। পরিবারের দাবী মাহমুদুল তাদের মেয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করছে এবং লুকিয়ে রেখেছে। মেয়েটিকে খুঁজে না পেয়ে আদলতের দারস্ত হয়েছে পরিবারটি।
এদিকে ছেলের পরিবারের অভিযোগ তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এব্যাপারটি মিমাংসার জন্য দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। পারিবারিক ভাবে বিয়ের জন্য প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেয়ের পরিবার মেনে নেয় নি। তারা দুজনে নাম মাত্র ফুফু-ভাজিতা। তাদের মধ্যে কোন রক্তে সম্পর্ক নেই। তারা দুজনের নিজের ইচ্ছেতেই বিয়ে করতে পারে। এব্যাপারে আমরা কোন কিছু জানি না। তাদের ধারণা মেয়েটি ছেলেটিকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।
এস আই শাহিন আরো জানান, মাহমুদুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে দুএকটি কথা বলার পর কল কটে দিয়েছে। এরপর থেকে নাম্বার টি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের ধারণা তারা দুজনেই সিরাজগঞ্জ জেলার ভিতরেই আছে। যেকোন মূল্যে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ও এ মামলার প্রধান আসামী মাহমুদুল তালুকদারকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে। আমরা গ্রেফতার অভিযান অব্যহত রেখেছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/নীল