নামে নামে যমে টানে, যা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন যুবক

এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার (২৫)। আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে ১১ দিন কারাভোগ করতে হয়েছে। অবশেষে রোববার রাতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের এই যুবক কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

আক্কেলপুর থানার ওসি সিরাজুল ইসলামের কাণ্ডজ্ঞানহীন ভুলের খেসারত দিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তাকে গত ৪ অক্টোবর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম সরকারের চাচা ফারুক হোসেন জানান, রোববার ঢাকার যুগ্ম দায়রা জজ-৫ আদালতে জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে স্বশরীরে হাজির করা হয়। এরপর তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদের কাটিং উপস্থাপন করে তার মুক্তির আবেদন জানান।

বিচারক জিনাত হাসান জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে অব্যাহতি (রিলিজ অর্ডার) এবং প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।
আদালতের ওই আদেশ হাতে পাবার পর কারা কর্তৃপক্ষ রাতে জাহাঙ্গীর আলমকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।

উল্লেখ্য, ঢাকার একটি আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির নাম, ঠিকানা ও বাবার নামে মিল পাওয়ায় গত ৪ অক্টোবর গভীর রাতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানা পুলিশ পৌর সদরের কলেজপাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন তাকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, আক্কেলপুর পৌর সদরের শান্তা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ওরফে উজ্জ্বল উপজেলা শহরের আক্কেলপুর কলেজবাজার মেইনগেটের পূর্বদিকে ‘মেসার্স সরদার ট্রেডার্স’ নামে একটি দোকান দিয়ে কীটনাশকসহ অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা করতেন।

এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার তার ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মালামাল বাকিতে নেন। পরে বকেয়া পরিশাধ না করায় পাওনাদাররা তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন।

ওই মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কয়েকদিন কারাবাসের পর হাজিরার শর্তে মুক্তি পান। কিন্তু, এরপর থেকেই জাহাঙ্গীর আলম লাপাত্তা। একাধিকবার সমন দিয়েও না পেয়ে আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
সেই ওয়ারেন্টমূলে প্রকৃত আসামির স্থলে পুলিশ নিরপরাধ এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, ১৬ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ