দেশের আলুর বাজারে চলছে ঘোলাটে অবস্থা। কৃষি বিপণন অধিদফতর নির্ধারিত দাম কার্যকর না হলেও রাজশাহীতে কমেছে আলুর দাম। রাজশাহীর খুচরা বাজারে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
তবে পাইকারি বাজারে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকায়। শনিবার (২৪ অক্টোবর) রাজশাহীর পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। চলতি মাসের শুরুতে দেশে হঠাৎ আলুর দাম বাড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন রাজশাহীর স্বল্প আয়ের মানুষ। এক মাস আগেও রাজশাহীর বাজারে যে আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায় পাওয়া যেতো। মাস ঘুরতে না ঘুরতে সেই আলুর দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৫০-৬০ টাকা।
আলু ব্যবসায়ী ও বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় মাসের শুরুর দিকে হঠাৎ আলুর দাম দ্বিগুণ বেড়ে ৬০ টাকায় ওঠে। পরে কৃষি বিপণন অধিদফতর আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বেঁধে দেয়। তবে তা কার্যকর করতে না পেরে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) আবারো খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম পুনর্নির্ধারণ করে সরকার। দ্বিতীয় ধাপে দাম নির্ধারণ করা হয় ৩৫ টাকা। এরপর থেকে বাজারে আলুর সরবরাহ বাড়তে থাকায় দামও কমছে। কয়েকদিনের মধ্যে দাম আরও কমবে।
কৃষি বিপণন অধিদফতর তিন স্তরে আলুর দাম নির্ধারণ করে। কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৭ টাকা, পাইকারিতে ৩০ টাকা কেজি এবং খুচরা বাজারে ৩৫ টাকা কেজি দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি না হলেও আগের তুলনায় দাম কমায় বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজশাহীর সাহেববাজারে আসা ক্রেতা কায়েস উদ্দিন বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না। তবে আগের তুলনায় দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। বাজারে শাকসবজি, চাল সবকিছুর দাম বাড়তি। বাজার যথাযথ মনিটরিং করা দরকার। মনিটরিং না থাকলে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কাছে সাধারন মানুষ জিম্মি হয়ে পড়বে।
রাজশাহী সাহেব বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন কাদের বলেন, মান ভেদে আলু ৩৫ থেকে ৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে ভালো আলু ৩৭ টাকা বিক্রি করছি। কোল্ড স্টোরেজগুলো এখন আলু ছাড়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এটা অব্যাহত থাকলে সামনে দাম আরও কমবে।
একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. সাফায়েত বলেন, আজ আলু বিক্রি করছি ৪০ টাকায়। পাইকারি বাজারে দাম কমলে খুচরা বাজারে দাম আরও কমবে।
এদিকে আলুর দাম নির্ধারণের সরকারি সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে রাজশাহীর রহমান কোল্ড স্টোরেজ মালিকেরা। আলু সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অধিক ফলনের কারণে গত ১০ বছর ধরেই আলোতে লোকসান হচ্ছে। আমি গত বছর লোকসান দিয়েছি। এবার বাজার ভালো থাকায় একটু লাভের সুযোগ ছিল। সরকার লোকসানে হস্তক্ষেপ না করলেও এখন লাভে ঠিকই হাত দিয়েছে।