লকডাউনের মধ্যেও রাজশাহীতে বাড়ছে জনসমাগম!

গোটা দেশ কাঁপছে করোনা আতঙ্কে লকডাউন রয়েছে দেশের বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও। কিন্তু হালে লোক সমাগম দেখে বোঝার উপায় নেয় যে লকডাউন চলছে!

শহরের রাজপথ থেকে শুরু করে হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লার গলিপথ সর্বত্রই গিজগিজ করছে মানুষ। অসচেতনতার অভাবে মানুষের মধ্যে রক্ষা করা যাচ্ছে না শারীরিক ও সমাজিক দূরত্ব।

বিভিন্ন জেলা ঘুরে শেষ পর্যন্ত গত ১২ এপ্রিল রাজশাহীতেও হানা দিয়েছে কোভিড-১৯। গত ১২ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত এ ২০ দিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে।

ফলে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এমন অবস্থায় রাজশাহীর রাজপথে আবারও বেড়েছে জনসমাগম। বিভিন্ন এলাকায় গত দুইদিন থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।

রোববার (০৩ মে) সকালে রাজশাহী মহানগরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট আলুপট্টি কুমারপাড়া, লক্ষ্মীপুর, সিঅ্যান্ডবির মোড়, গোরহাঙ্গার থাকা শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান চত্বরে গিয়ে দেখা যায় ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি।

অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই সকাল থেকে চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। দেখে বোঝার উপায় নেই লকডাউন চলছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত থাকলেও ঢিলেঢালাভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কোনো রকম বাধা না থাকায় সড়কে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

তবে করোনা ভাইরাস যেহেতু ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে তাই সবাইকে ঘরে থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে বারবার। কারণ চলমান এ ছুটির মূল উদ্দেশ্যই ছিল কোয়ারেন্টিন বা সঙ্গনিরোধ।

কিন্তু ধীরে ধীরে রাজশাহীর পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে তাড়া দিলে লোকজন বাড়ি বা গলিপথে ঢুকে যাচ্ছে।

আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে যাওয়ার পরপরই সবাই বাইরে সড়কে নেমে আসছেন। সচেতনতার অভাবে মানুষ যেন ঘরে থাকতেই চাচ্ছেন না। আবার যারা ঘরে থাকছেন তারাও মাঝে মধ্যেই বাইরে গিয়ে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন কাজ-কর্ম খেলা বা আড্ডায় মেতে উঠছেন।

তবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে এরইমধ্যে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। এসময় তারা বাজারে আসা মানুষদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ সেরে দ্রুত বাড়ি চলে যাওয়ার আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে সবার মুখে মাস্ক পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে করোনার সংক্রমণ রোধে জেলা প্রসাশন রাজশাহীর কাঁচাবাজারকে একমুখী করেছে। আগে এ বাজারে সড়কের দুই পাশেই ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে বিক্রি করতেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানান, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। সেনা সদস্যরা এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। তাদের পাশাপাশি পুলিশসহ অন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শহর ও উপজেলা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

Scroll to Top