বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গণধর্ষণের বিচার চাইতে এসে ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে পুনরায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। এ ঘটনায় ধুনট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন নির্যাতিত তরুণী।
মঙ্গলবার বিকেলে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী বাদী হয়ে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর আদালতে মামলাটি করেন। শুনানি শেষে আদালত ওই নারীর অভিযোগ এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে করা মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক নম্বর আসামি ধুনটের মাঠপাড়া গ্রামের লিমন হোসেনের (২০) সঙ্গে প্রায় তিন মাস আগে মুঠোফোনে টাঙ্গাইলের ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
গত ১৪ আগস্ট ওই নারী টাঙ্গাইল থেকে প্রেমের টানে ধুনটে লিমনের কাছে চলে আসেন। লিমন ওই নারীকে শেরপুর উপজেলার সকাল বাজার এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান এবং বিয়ের কথা বলে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
পরদিন সকালে লিমন ওই নারীকে শেরপুর থেকে তার নিজগ্রাম ধুনট সদর ইউনিয়নের মাঠপাড়ায় নিয়ে যায়। এরপর ওই নারীকে তার গ্রামের দুই বন্ধু ইব্রাহীম হোসেন (২৪) ও মুকুল হোসেনের (২০) হাতে তুলে দিয়ে পালিয়ে যান। ইব্রাহীম ও মুকুল ওই নারীকে একটি ধুনটের একটি বাড়িতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
পরে ওই নারী বিচারের জন্য গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে ধুনট সদর ইউপির চেয়ারম্যান লাল মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় লাল মিয়া এ অভিযোগের বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে ওই নারীকে তার বাড়িতে থাকতে দেন। সেখানে তিনিও রাতে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন ১৬ আগস্ট সকালে ওই নারী ধুনট থানায় গিয়ে মামলা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বলে আদালতে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
যার কারণে শেষ পর্যন্ত ২২ আগস্ট বিকেলে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর আদালতে গিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী।
শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমদাদুল হক ধুনট থানার পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ধুনট সদর ইউপির চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
ধুনট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, থানায় মামলা করতে এসে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। এছাড়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করার কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। বুধবার বিকেল পর্যন্ত আদালতের কোনো আদেশ এখনও পাইনি। আদেশ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ২৪ আগস্ট, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে