কুয়েতে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা সহজেই সৌদির মাল্টিপল ই-ভিসা পেলেও বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। প্রবাসী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি গিয়ে ফেরত আসেন না। এতে কুয়েতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিসা দিতে অনীহা তৈরি হয়েছে রিয়াদের।
প্রবাসী বাংলাদেশি মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ কুয়েতে ওমরাহ ভিসা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রায়ই তাকে যেতে হয় সৌদি আরব। প্রতিবার ওমরাহ ভিসায় কাফেলার সঙ্গে সৌদি যেতে খরচ বেশি হওয়ায় গত ১১ নভেম্বর তিনি আবেদন করেছিলেন এক বছরের মাল্টিপল ভিসার। কিন্তু তাকে ভিসা দেয়নি রিয়াদ।
আরেক প্রবাসী ফরহাদ কুয়েতে মোবাইল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওমরাহ ভিসার তুলনায় খরচ কম এবং হজ মৌসুম ছাড়া যেকোনো সময় ভ্রমণ করতে পারবেন এই আশায় গেল রমজানে সৌদি আরবের এক বছরের মাল্টিপল ভিসার আবেদন করেও ব্যর্থ হন।
কুয়েতের বৈধ রেসিডেন্ট কার্ডধারী বিভিন্ন দেশের প্রবাসী খুব সহজেই পাচ্ছেন সৌদি আরবের এক বছরের মাল্টিপল ভিসা। যেকোনো পেশায় নিয়োজিতদেরই ভিসা দিচ্ছে রিয়াদ। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশের প্রবাসীরা মাল্টিপল ই-ভিসা পেলেও বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা।
প্রতিবছর দশ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি ওমরাহ করতে কুয়েত থেকে সৌদি আরবে যান। মাল্টিপল ই-ভিসা না পাওয়ায় বেশি অর্থ দিয়ে ওমরাহ ভিসা নিয়েই সৌদি যেতে হচ্ছে তাদের।
এছাড়া ওমরাহ হজের বাংলাদেশি টুর গাইড বা মোয়াল্লেমরা কুয়েত থেকে মাল্টিপল ই-ভিসা না পাওয়ায় ভ্রমণকারীদেন কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছেন না। এতে অন্য দেশের ওমরাহ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে টিকে থাকা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।
প্রবাসী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি গিয়ে আর ফেরেন না। এতে কুয়েতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিসা দিতে অনীহা তৈরি হয়েছে রিয়াদের।
বাংলাদেশি ওমরাহ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিশেন কুয়েতের সভাপতি কাজী ইকবাল বলেন, রোহিঙ্গারা এখানে অবৈধভাবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবের গিয়ে ফেরত আসে না। আর সেই অপবাদ হচ্ছে বাংলাদেশিদের। কূটনৈতিক তৎপরতা আরও জোরদার করে এর সুনির্দিষ্টি সমাধান করার দাবি জানান তিনি।
৩৪ দিনার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৬শো টাকা ফি দিয়ে সৌদি আরবের এক বছরের মাল্টিপল ই-ভিসা পাচ্ছেন অন্য দেশের প্রবাসীরা। অন্যদিকে ৪৪ দিনার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭ হাজার ৬শো টাকা ফি দিয়ে ওমরাহ ভিসায় কেবলমাত্র একবার সৌদিতে প্রবেশের অনুমতি পান বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী প্রবাসীরা।