মালয়েশিয়ায় কাজ না পেয়ে ক্ষুধা আর চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন পাবনার প্রবাসী মো. শফিকুল ইসলাম (৩৩)।
উন্নত জীবনের আশায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে বছরের ৫ আগস্ট পেত্রা জেহরা বারহাদ নামে একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে ইউনিক নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কাজের ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন শফিকুল।
প্রায় পাঁচ মাস কাজ না পেয়ে ক্ষুধা আর চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় শফিকুলকে। পরে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শফিকুল মারা যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শফিকুল অসুস্থ ছিল, চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। প্রতিদিনের মতো রাতে ঘুমাতে গেলেও ঘুম থেকে আর ওঠেনি।
শফিকুলসহ এ কোম্পানিতে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসেন ৭১ জন বাংলাদেশী। তাদের কেউ কেউ চড়া সুদে ঋণ নিয়ে, আবার কেউ জমি বিক্রি করে দালালদের অর্থ পরিশোধ করেছেন। দালালরা তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, মালয়েশিয়ায় তাদের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ দেওয়া হবে, যেখানে বেতন মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। মালয়েশিয়ায় আসার পরই স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তাদের। প্রায় পাঁচ মাস কাজ না পেয়ে ক্ষুধা আর চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব প্রবাসীরা। কষ্টের অভিযোগ তুলে ধরতে গেলেই শিকার হতে হয় শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের লেবার কাউন্সিলর সৈয়দ শরিফুল ইসলাম বলেন, পেত্রা জেহরা বারহাদ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতে এই কোম্পানি যাতে নতুন কোনো কর্মী না আনতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে হাইকমিশন। এখনও কাজ না পাওয়া কর্মীদের সমস্যা সমাধানে হাইকমিশন কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, শফিকুল ইসলামের মরদেহ কোম্পানির মাধ্যমে দেশে পাঠাতে কাজ করছে হাইকমিশন।একই সঙ্গে বৈধভাবে আসায় তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।