রোজার ঈদকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। চলতি এপ্রিল মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে ৪৭ কোটি মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। এই হিসাবে দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে।
জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। তাছাড়া সব বিভাগের মধ্যেও ঢাকা শীর্ষে। প্রতি বছর দেশে আসা মোট রেমিট্যান্সের ৪৭-৪৮ শতাংশই আসছে এ বিভাগের মাধ্যমে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এক হাজার ৬০৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৭৬৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার। সম্প্রতি প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৬০৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা সর্বোচ্চ ৭৬৫ কোটি ৩২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। মার্চ মাসে মোট রেমিট্যান্স আসে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এই মাসে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা পাঠায় ৯৬ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি।
রমজান ও ঈদের কারণে আগের চেয়ে বেশি আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। আবার জাকাতের তহবিলও আসছে। এ ছাড়া ডলার-সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক বেশি দামে প্রবাসী আয় নিয়ে আসছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় আসার চিত্রে। ব্যাংকগুলো এখন প্রবাসী আয় সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা দাম দিতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ঢাকা জেলার প্রবাসীরা পাঠায় ৬৬ কোটি ১৮ লাখ ডলার, টাঙ্গলাইের প্রবাসীরা তিন কোটি ৩২ লাখ, গাজীপুরের দুই কোটি ৭৩ লাখ, কিশোরগঞ্জ দুই কোটি ৮৩ লাখ, মুন্সিগঞ্জ তিন কোটি ৮০ লাখ, নারায়নগঞ্জ দুই কোটি ৯৬ লাখ, নরসিংদী চার কোটি ১৮ লাখ, মাদারীপুর দুই কোটি ৪৯ লাখ, শরীয়তপুর দুই কোটি ৪১ লাখ, ফরিদপুর এক কোটি ৮৯ লাখ, মানিকগঞ্জ এক কোটি ৬৯ লাখ, গোপালগঞ্জ ৮১ লাখ এবং রাজবাড়ীর প্রবাসীরা ৭২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্সের পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই ৯ মাসে বরিশাল বিভাগের প্রবাসীরা ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রবাসীরা ৪৩৬ কোটি তিন লাখ, খুলনা বিভাগের ৭০ কোটি ১৩ লাখ, ময়মনসিংহ বিভাগের ২৯ কোটি ৩৫ লাখ, রাজশাহী বিভাগের ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ, রংপুর বিভাগের ২৬ কোটি ২৭ লাখ এবং সিলেট বিভাগের প্রবাসীরা ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।