ইতালি প্রতিনিধি: ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদার রোমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জামায়াত-বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। গত ২৩ অক্টোবর সোমবার অনুষ্ঠিত ঐ সমাবেশ নিয়ে পুরো ইতালিতে চলছে সমালোচনার ঝড়।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির অনেক নেতা রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদারকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। ইতালীর এক বিতর্কিত নেতার কথায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকেন বলে রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ঐ নেতা কোথাও যেতে নিষেধ করলে তিনি সেখানে যান না। আবার ঐ নেতার নির্দেশেই তিনি জামায়াত-বিএনপি থাকলেও সেখানে যোগদান করেন। তার সর্বশেষ প্রমান গত ২৩ অক্টোবর সোমবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম সমিতির “মেজবান” নামক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
তিনি জামায়াত নেতা আবু তৈয়ব এবং বিএনপি সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে বসা ছিলেন। বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক ইউরোপের যে কোন দেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সফরে এলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য কালোপতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভে সক্রিয় অংশ নেন । তিনি তারেক রহমানের আস্থার লোক হিসেবে পরিচিত ।
অথচ বহু অনুষ্ঠানে জামায়াত-বিএনপির লোক থাকবে অজুহাতে রাষ্ট্রদূত ঐসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন না। এমন কি সার্বজনীন সংগঠন বাংলাদেশ সমিতির কোন অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায় না। সোমবারের অনুষ্ঠানে ইতালী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী আহমেদ ঢালীকে মঞ্চে দেখা গেলেও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল, সহসভাপতি আব্দুর রব ফকির এমনকি সর্বইউরোপ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একে এম লোকমান হোসেনকেও মঞ্চের বাইরে দেখা গেছে। অনুষ্ঠানে নানা কারণে বিতর্ক এবং হট্টগোল শুরু হলে এক পর্যায়ে পুলিশও চলে আসে। বাংলাদেশ সমিতির সাবেক সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু তার ফেইসবুকে লিখেছেন “দেলোয়ার হোসেন সাইদীর মুক্তি আসন্ন। রাষ্ট্রদূত, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী ফোরাম (জামায়াত-শিবির সমর্থিত) এক সাথে। এটা সমাজের জন্য ভালো লক্ষণ।” জালালাবাদ সিলেট ফেইসবুকে লিখেছেন “রাষ্ট্রদূত, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত এক সাথে , শুভ লক্ষণ।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোমের এক নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগের আড়ালে জামায়াত প্রিয় এই রাষ্ট্রদূতকে যতদ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে নেতা উচিত। রাষ্ট্রদূত সচিব পদ থেকে অবসরের পর ইতালীতে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পান।
এদিকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সহযোগী ইতালির নাগরিক লেখক, অনুবাদক মারিনো রিগনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিলান কন্সুলেন্ট অফিস নূন্যতম শোক প্রকাশ করেনি ।এমনকি ইতালিতে ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশের পরম বন্ধু মারিনোর শেষকৃত্য দূতাবাস বা কন্সুলেন্ট অফিসের কাউকে দেখা যায় । অথচ ইতালিতে বিএনপি- জামাতের সাথে বাংলাদেশের সরকারের কর্মকর্তা প্রধান অতিথি হয়ে অনেক সময় পার করলেন ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ