লিবিয়ায় মাত্র কয়েক দিন, এরপর সাগর পেরোলেই ইতালি। সেখানে যা আয় হবে, অন্তত এক মাসেই দেশে বাড়ি করা যাবে—এমন প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে কর্মী পাঠাচ্ছে দালালচক্র। অথচ লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার ওই পথটি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) দৃষ্টিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
আঁতকে ওঠার মতো নির্মম নির্যাতনের শিকার মাদারীপুরের সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামের চা বিক্রেতা হাবীব বেপারির একমাত্র ছেলে রফিকুল বেপারির (২২)। বসতভিটা ২৭ লাখ টাকায় বন্ধক রেখে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ছিলো রঙ্গীন স্বপ্ন।
কিন্তু মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় ইতালি থেকে মুঠোফোনে খবর আসে রফিকুল বেপারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ভেঙ্গে যায় স্বপ্ন। রফিকুলের মৃত্যুর সংবাদে পরিবারে শোকের মাতাম চলছে। পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা-বাবা।
রফিকুলের পিতা হাবিব বেপারী জানায়, আমার ছেলে রফিকুলকে গত ফেব্রুয়ারিতে ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে যান পার্শ্ববর্তী ধুরাইল ইউনিয়নের হোসেনেরহাট এলাকার দালাল আলমগীর খা। এসময় দালাল আলমগীরকে আমি নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা দেই। পরে মাফিয়া দিয়ে ধরিয়ে আমার কাছ থেকে আরো দশ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তারপরও আমার ছেলেকে লিবিয়া থেকে ইতালিতে নিতে পারেনি। পরে আমি কুদ্দুস নামে অন্য এক দালালের মাধ্যমে দশ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি পাঠনোর ব্যবস্থা করি।
তিনি আরও জানান, আলমগীর দালালের লোকেরা আমার ছেলেকে শারীরিক নির্যাতন করে। এতে করে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ অবস্থায় ইতালি পৌঁছানোর পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আমার ছেলে। আমি এর বিচার চাই।