৪২ বছর পর স্ত্রী-সন্তানের কাছে লাশ হয়ে ফিরছেন তাহের আহমেদ

দীর্ঘ ৪২ বছর পর লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সন্তান তাহের আহমেদ স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরছেন কফিনে বন্দি হয়ে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ব্রঙ্কসের মন্টিফিউর হাসপাতালে ৮ মার্চ ইন্তেকাল করেন তাহের।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট মাজেদা উদ্দিন। তিনি জানান, অভিবাসনের মর্যাদা পাননি তাহের। দিনাতিপাত করতেন নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে পার্কচেস্টার সাবওয়ে সংলগ্ন এলাকায় বই-পত্র বিক্রি করে। নিকটেই ১৯৩৯ এলিস এভিনিউতে প্রবাসী বাবুল নবীর বাসার বেসমেন্টে বাস করতেন তিনি। বাবুল নবীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

পারিবারিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও জানান, একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখ তিনি দেখেননি। সে যখন তার স্ত্রীর গর্ভে, তখনই স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় এসেছিলেন তাহের আহমেদ। এরপর দীর্ঘ ৪২ বছরেও অভিবাসনের মর্যাদা না পাওয়ায় স্ত্রী-সন্তানের কাছে যাবার সৌভাগ্য হয়নি। সর্বশেষ জো বাইডেনের অভিবাসন ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব কংগ্রেসে বিবেচনাধীন থাকায় স্বস্তিবোধ করছিলেন তাহের আহমেদ। ফেসটাইমে স্ত্রী-পুত্রকে সে আশ্বাসও দিয়েছিলেন তাহের আহমেদ। কিন্তু করোনায় তার সবকিছু তছনছ করে দিলো।

তাহের আহমেদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে ওয়েস্টচেস্টার মর্গে নেয়া হয়েছিল। মাজেদা উদ্দিনের তদবিরে লাশ আনা হয় ব্রঙ্কসে গানহিল মর্গে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টারে বাদ যোহর জানাযার পর সন্ধ্যায় আমিরাতের ফ্লাইটে বাংলাদেশে রওয়ানা দিয়েছে তাহেরের লাশবাহী কফিন। নিউইয়র্কে বসবাসরত রায়পুরের লোকজনের আর্থিক সহায়তায় তাহেরের ফিউনারেল ও বিমানের খরচ গঠিত হয়।

Scroll to Top