বিদেশ গিয়ে আয় রোজগার করে নিজে ভালো থেকে পরিবারকে ভালো রাখার জন্য গৃহকর্মীর ভিসা নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলো কিশোরী উম্মে কুলসুম (১৪)। সম্প্রতি সৌদি আরবে গৃহকর্তা আর তার ছেলের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায় কিশোরী কুলসুম।
কিশোরী উম্মে কুলসুম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার নূরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের কন্যা। ১৭ মাস আগে উম্মে কুলসুমকে স্থানীয় দালাল রাজ্জাক মিয়ার মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে মেসার্স এমএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজে সৌদি আরব পাঠানো হয়। সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে যোগদানের পর থেকেই কুলসুমের ওপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে গৃহকর্তা ও তার ছেলে। মালিকপক্ষ নির্যাতনের কারণে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও এজেন্সির পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত ৪ মাস আগে সৌদি আরবে গৃহকর্তা ও তার ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাঁটু, কোমর ও পা ভেঙে দেয়। এর কিছুদিন পর একটি চোখ নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে সৌদি আরবের পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সেখানকার কিং ফয়সাল হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ৯ অগাস্ট সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় কুলসুম। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর রাতে কুলসুমের মরদেহ দেশে আনা হয়।
এ ঘটনায় কিশোরীকে সৌদি পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মকবুল হোসাইন ও তার সহযোগী তারেককে ঢাকার ফকিরাপুল থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় ফকিরাপুলের মেসার্স এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, সৌদি আরবে গৃহকর্তার নির্যাতনে কিশোরী উম্মে কুলসুম নিহত হওয়ার ঘটনায় তাকে সৌদিতে পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। এরই মধ্যে ওই অফিস থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।