শুরু হয়েছে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম

অবশেষে গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিঙ্গাপুরে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হচ্ছে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের দিয়ে কেননা মালয়েশিয়াতেই বাংলাদেশের প্রায় ১২লক্ষ প্রবাসী বসবাস করে। আগারগাঁও নির্বাচন ভবন থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন। নির্বাচন ভবনের লেভেল-৫ এর সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষ্যে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর। প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমবিষয়ক উপস্থাপন করবেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

ইসির যুগ্ম সচিব ও এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা শুরুতেই অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটার করার পদক্ষেপ নিয়েছি। অনলাইনে নিবন্ধন হলেও যোগ্য বলে যারা বিবেচিত হবেন, তাদের বায়োমেট্রিক আমরা সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়েই সংগ্রহ করব।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। ওয়েবসাইটটির ঠিকানা: services.nidw.gov.bd আবেদনের পর সেই সব আবেদন সঠিক কি না, ইসি তা কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাই করবে। যাচাইবাছাই শেষে ইসির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে যোগ্য ও সঠিক আবেদনকারীদের ছবি তোলাসহ ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের মনির ছাপ (আইরিশ) গ্রহণ করবে। প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আটটি তথ্য দিতে হবে।

সেগুলো হলো পিতা ও মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপ কোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্টেট বা প্রদেশ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম প্রভৃতি। এছাড়াও পাসপোর্ট নম্বরও উল্লেখ করতে হবে।

ইসি সূত্রে আরো জানা গেছে, মালয়েশিয়া ছাড়াও যুক্তরাজ্য, দুবাই ও সৌদি আরবের প্রবাসীরা এই সুযোগ পাবেন। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও এই সুযোগ পাবেন। এজন্য ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে।

এর আগে ইসি সরাসরি সিঙ্গাপুরে গিয়ে সেখানে বসবাসরত প্রবাসীদের ভোটার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে যথাসময়ে সিঙ্গাপুর সরকারের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। পরে ইসি তাদের সিদ্ধান্ত পালটে মালয়েশিয়ায় অনলাইনে নিবন্ধনের পদক্ষেপ নেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে দেশের উচ্চ আদালত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার সংবিধান স্বীকৃত বলে ঘোষণা দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর পর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। বিশ্বের ১৫৭টি দেশে কোটির ওপরে প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। বর্তমান কমিশনের এই উদ্যোগে তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের অবসান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা।

Scroll to Top