সুবিধা পাচ্ছে বাংলদেশিরা। ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।নতুন এই সেবা চালু হলে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা সেখানে ইসির রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে গিয়ে অথবা অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করা যাবে। পরে দেশে এসে আঙুলের ছাপ দিয়ে এনআইডি সংগ্রহ করতে পারবেন প্রবাসীরা।
সাইদুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারের অনুমতি পেতে দেরি হচ্ছে।
“সিঙ্গাপুরে নিয়মকানুনও কড়া। সেজন্য আমরা অনলাইন সেবাটি চালু করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সিঙ্গাপুরের আগেই মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এ সুযোগ উম্মোচন করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ৫ নভেম্বর ঢাকায় নির্বাচন কমিশন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যেমে মালয়েশিয়ায় অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার উদ্বোধন করবেন। কমিশনের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। মালয়েশিয়ায় থাকবেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।
‘অদূর ভবিষ্যতে’ সিঙ্গাপুরেও প্রবাসীদের জন্য এ সেবা চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মহাপরিচালক।
ইসির এনআইডি উইংয়ের কমিনিউকেশন শাখার অফিসার ইনচার্জ স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান জানান, মালয়েশিয়ার পর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুবাইয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর যুক্তরাজ্য, সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশে দ্রুত অনলাইন সেবা চালুর চেষ্টা হবে।
অনলাইনে এই সেবা দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে; নীতিমালাও করা হয়েছে।
বিদেশে বসে যারা অনলাইনে আবেদন করবেন, তাকে দেশে সর্বশেষ যে এলাকায় বসবাস করেছেন বা নিজের অথবা বাবার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।
তার আবেদন সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের পর দশ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও ভোটারের ছবি তুলে এনআইডি সরবরাহ করা হবে।
এর আগের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে ও ইসির ওয়েবসাইটে দাবি-আপত্তির জন্য তালিকা দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করা যাবে।
এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা হবে দুটি প্রক্রিয়ায়। প্রথমে ইসি একটি আলাদা সার্ভার বসিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে আলাদা লিংক যুক্ত করবে। সেই লিংকে ক্লিক করে প্রবাসীরা সংশ্লিষ্ট দেশে বসেই তাদের প্রয়োজনীয় সব কাগজ/দলিলপত্র আপলোড করবেন এবং ফরম পূরণ করে আবেদন সম্পন্ন করবেন।
এরপর আবেদনটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হবে তদন্তের জন্য। সেখান থেকে ইতিবাচক প্রতিবেদন পেলে আবেদনকারীকে নিবন্ধন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে ইসি।
পরে আবেদনকারীর দশ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নিতে সংশ্লিষ্ট দেশেই নিবন্ধন কেন্দ্র বসানোর পরিকল্পনা আছে ইসির।
১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে বর্তমানে ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত। আর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ের হিসাব পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৭৫ লাখের মত।