বাংলাদেশি কানাডিয়ান নাগরিক দুর্দানা ইসলাম কানাডার ম্যানিটোবা প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি(এনডিপি) তাকে দলের প্রার্থী হিসেবে সেইন রিভার আসন থেকে মনোনয়ন দিয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ম্যানিটোবার ৫৭টি আসনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনে এমএলএল পদে বিজয়ের প্রত্যাশা নিয়ে দুর্দানা ইসলাম এখন পাঠ পর্যায়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি প্রতিদ্বন্দিতা করবেন স্থানীয় সরকারে সাংসদ জেনিক মরলে লোকমের সাথে। বর্তমানে এই প্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে প্রগ্রাসিভ কনজারভেটিভ পার্টি আর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।
বাংলাদেশের মেয়ে দুর্দানা চট্টগ্রামে ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা থেকে পিএইচডি করে বর্তমানে উইনিপেগ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। তিনি ১৯৯৪ সালে কুমিল্লা বোর্ড থেকে মেধাতালিকায় স্থান লাভ করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম থেকে এইচএসসি পাস করার পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি নেন।
পরে অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে মাস্টার্স করেন এবং ২০০৮ সালে কানাডায় যান। দুর্দানার বাবা বাংলাদেশের একুশে পদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম। তার মা ডাক্তার আঞ্জুমানরা বেগম একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ।
দুর্দানা ইত্তেফাকের সাথে আলাপ কালে জানান, তাঁর পারিবারিক রাজনৈতিক ভাবে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। দুর্দানা নানীর বাবা মৌলানা শামসুদ্দিন আহমেদ গান্ধীর সাথে রাজনীতি করেছেন, চার বার মন্ত্রী ছিলেন। এবং বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আবার নানার বাবা খান বাহাদুর আব্দুস সাত্তার চট্টগ্রাম পৌর সভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম চেয়ারপার্সন। আর ভাসানীর সাথে যুক্ত ছিলেন নানা ব্যারিস্টার বজলুর সাত্তার।
তিনি ইত্তেফাককে আরো বলেন, অন্টারিও পার্লামেন্টের এমপিপি বাংলাদেশি মেয়ে ডলি বেগমের মতো তিনিও ম্যানিটোবার এমএলএল হয়ে ইতিহাস গড়তে চান। সেই সাথে নতুন প্রজন্মদের জন্য পলিসি মেকিংয়ের নতুন রাজনীতি উপহার দেয়ার জন্যই তার রাজনীতিতে আসা।
তিনি বলেন, আমাদের ম্যানিটোবা প্রভিন্স এখনো কানাডার অন্যান্য প্রভিন্সের চেয়ে পিছিয়ে আছে। যেমন বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতে অনেক বাজেট কমিয়েছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ এবং কৃষিখাতে আরো বেশি গুরুত্ব দেবো। এবং একজন বাংলাদেশি হিসেবে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক খাত থেকে শুরু করে নানান বিষয়ে সংযোগ ঘটানোর চেষ্টা করবো। ম্যানিটোবার ক্যালোলা, গম, তেল, ডাল ইত্যাদি বাংলাদেশে রপ্তানি করছে, তা আরো সম্প্রসারিত করা এবং অপর দিকে কানাডাতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের আরও প্রসারে সহযোগী ভূমিকা পালন করবেন বলে জানান।
এছাড়াও কানাডায় প্লাস্টিকের ব্যাগ এবং ওয়ান টাইম ব্যবহার্য ক্ষতিকর ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তার বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের পাটের না কাপড়ের ব্যাগ সেই স্থান পূরণ করতে পারে, বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।