তপন মাহমুদ লিমন : ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ছিলো
না, একই সঙ্গে ছিলো একটি বিপ্লবী প্রতিষ্ঠানও। তবে স্বাধীনতার পর এই বিশ্ববিদ্যালয় তার বিপ্লবী সত্তা হারিয়ে রাষ্ট্রের একটি অধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তেয়াত্তরের অধ্যাদেশ যেটুকু স্বকীয়তা দিয়েছিলো, পরবর্তী সময়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, কিছু শিক্ষক ও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কারণে তাও হারিয়ে ফেলেছে। নামে পাবিলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এটি কার্যত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে অনেক আগেই। ফলত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাকে নেতিবাচক কিছু (আপোস, সরকারের অনুগামী থাকা, সরকারি দলের নেতাদের তোষণ করা, পদ-পদবির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যথেষ্ট নিচে নামতে পারার ক্ষমতা, ক্ষমতাসীন হলে দখলদারিত্ব বজায় রাখার ‘বৈধতা’, বিরোধী ও সাধারণের উপর যেকোনো ধরনের নিপীড়ন করার অবাধ সুযোগ, নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম ইত্যাদি) শিক্ষা দেয়া ছাড়া স্বাধীনতাপূর্ব ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা, বলতে গেলে, সত্যিকার মানুষ হবার শিক্ষা দিতে পারেনি। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আদর্শ শিক্ষক, জনগণের পক্ষের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, মধুর ক্যান্টিন, বটতলা, কিংবা লাইব্রেরির সামনে নানা দাবিতে লড়াই সংগ্রাম করা, দেশের অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে দাঁড়ানো কিছু মানুষ আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছেন। পুনশ্চ : জনগণের টাকায় পড়ার সুযোগ পেয়ে একটা সনদও পেয়েছি। এটা দিয়ে করেকম্মে খাচ্ছি। তাই এই অর্থায়নকারী মানুষের প্রতি আমার একটা দায় আছে। কতোটা পূরণ করতে পারবো জানি না, সে নিয়ে অনেক অপরাধবোধও আছে। ফেসবুক থেকে