রংপুরে দেশীয় চোলাই মদ পান করে গত তিন দিনে পাঁচজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দুইজন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে হারাগাছ পৌর শহরের ধুমগাড়া গ্রামে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ ধুমগড়া গ্রামের মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে আমরুল ইসলাম (৪০), ক্যালেনটারি গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে আনারুল ওরফে মেডিকেল (৪৪), একই গ্রামের চাঁন মিয়া (৩৬), মিলনবাজার গ্রামের মৃত আবদার আলীর ছেলে এজারুল ইসলাম (৩৮), সারাই কাসাইটারী গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে ফুলবাবু (৫২) একই গ্রামের ওবায়দুল (৪৭), পশ্চিম পোদ্দারপাড়া গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে নুর আমিন ড্রাইভার (৪৩) চোলাই মদ পান করেন।
অতিরিক্ত মদ পানে বিষক্রিয়ায় ব্রেইন স্ট্রোক করে সোমবার রাতেই আমরুল ইসলাম নিজ বাড়িতে মারা যান। মঙ্গলবার দুপুরে আনারুল ওরফে মেডিকেল বাড়িতে ও এজারুল ইসলাম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে নুর আমিন ড্রাইভার ও ফুলবাবু হাসপাতালে মারা যান।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, নিহতরা আগে মাদক সেবন করলেও বেশ কিছুদিন ধরে তারা নেশা করে না।
নিহত ফুলবাবুর স্ত্রী গুলশান আরা জানান, তার স্বামী মুরগির ব্যবসা করেন। গত সোমবার রাতে বাড়ি ফিরে মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। প্রথমে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে বুধবার বিকালে তাকে রংপুর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একই কথা জানালেন, নিহত এজারুলের ভাই আলা মিয়া।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অতিরিক্ত মদপানে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও নিহতের পরিবারের সদস্যরা মামলা আতঙ্কে মদপানে মৃত্যুর ঘটনাটি গোপন করে রাখে।
হারাগাছ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মামুদার রহমান বলেন, স্পিরিট মিশ্রিত দেশীয় চোরাই মদ পানে পাঁচজন মারা যাওয়ার বিষয়টি গ্রামের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, হারাগাছ থানা হওয়ার পর এলাকায় মাদক সেবন ও বিক্রি বন্ধ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আবারও গোপনে বিভিন্ন এলাকায় মাদক সেবন ও বিক্রি হচ্ছে।
হারাগাছ থানার ওসি (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের কেউ অভিযোগ করে নাই। তবে ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে জানার পর চরচতুরা গাছবাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ঘটনার পরেই চরচতুরা গ্রামের চোলাই মদ বিক্রেতা নাজমুল গা ঢাকা দিয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মাহিগঞ্জ জোনের (এসি) মো. ফারুক আহমেদ জানান, তিনি বিষয়টি সবেমাত্র জেনেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, মাদকসেবী বা ব্যবসায়ী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।