দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে মাঝপথে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়নি, দলকে আরও স্ট্রংগার (শক্তিশালী) ও স্মার্টার (দক্ষ) করতেই তাদের দায়িত্ব অন্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জোটের শরিকদের মন্ত্রিপরিষদে না থাকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মন্ত্রিত্ব না থাকলে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐক্যজোট ভেঙে গেছে, এমন নয়।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের রেকর্ড গড়ার পর চমক লাগানো মন্ত্রিসভার সব সদস্য এদিন শপথ নেন। মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন শেখ হাসিনা। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। এছাড়া রয়েছেন মন্ত্রী ২৪ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন ও উপমন্ত্রী ৩ জন।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের আলাদা আলাদাভাবে শপথবাক্য পাঠ করান। তার আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শপথ অনুষ্ঠান শেষে তারা শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিচারপতিরা, শিক্ষক, কূটনীতিকরাসহ এক হাজারের মতো অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় কেউ পারফরমেন্স না করে মন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
আগের মন্ত্রিসভা থেকে নতুন মন্ত্রিসভা ছোট হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মন্ত্রিসভা কিছু সম্প্রসারণ তো মাঝে মধ্যে হয়ই। গতবারও প্রথম ক্যাবিনেট যখন হয়, কয়েকদিন পরই আবার সম্প্রসারণ হয়েছিল। এবার নতুন মন্ত্রী নতুন মুখ আসছেন, তারা কিন্তু ঠিকভাবে ডেলিভার (সঠিক দায়িত্ব পালন) না করতে পারলে আবার বাদও যেতে পারেন। ক্যাবিনেট রিশাফল (পরিবর্তন) হতে পারে। একটা সময় তো তাদের দিতে হবে। সেই সময়ে যদি তারা ডেলিভার করেন অন আওয়ার প্রমিসেস অন আওয়ার নির্বাচনী ম্যানিফেস্টোর ওপর, ভালো। পারফরমেন্সের ওপর নির্ভর করবে তারা কে কত সময় ধরে মন্ত্রিসভায় থাকতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘এবার কিন্তু প্রাইম মিনিস্টার খুব সিরিয়াস এবং এই ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন। পারফরমেন্স না করতে পারলে অবশ্যই কারও মন্ত্রী থাকার কোনো অধিকার থাকবে না।’
‘এবার মন্ত্রিসভায় একটা বিষয় এসেছে, সেটা খোলামেলা বলা উচিত। শেখ হাসিনার যে দৃষ্টিভঙ্গিটা কাজ করেছে সেটা হচ্ছে, তিনি এবার মন্ত্রিসভা গঠনে গুরুত্ব দিয়েছেন যেসব এলাকাগুলো দীর্ঘকাল ধরে মন্ত্রী হওয়া থেকে বঞ্চিত, যেসব জেলা থেকে মন্ত্রী হয়নি, সেসব জেলাগুলোতে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এবার অনেকগুলো জেলা থেকে নতুন মুখ এসেছে’- বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
নতুন মন্ত্রিসভায় প্রবীণদের বাদ দেয়ার কারণ জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘যিনি বাদ দিয়েছেন তাকে জিজ্ঞেস করুন। সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এখানে বাদ পড়াটা আমি ওভাবে বলতে চাই না। দায়িত্বের পরিবর্তন সেভাবেই দেখা যায়। তারা পার্টিতে মনোনিবেশ করবেন। বাদ দেয়া কথাটা ঠিক নয়।’
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ওয়াদা বাস্তবায়ন উপযোগী করে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করছেন বলেও জানান সেতুমন্ত্রী।
নতুন মন্ত্রিসভায় জোটের শরীকদের না থাকার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শরীকরা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। মন্ত্রী না হলে তারা থাকবেন না এমন নয়। ভবিষ্যতের মন্ত্রিসভা রিশাফলিং হবে। সময়ে সময়ে চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তনও হতে পারে। শরীকরা এখন নেই, ভবিষ্যতে আসবে না এমন নয়।’
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস