যে কারণে শরিকরা নেই মন্ত্রিসভায়

সরকারের আগের দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের শরিক দলের একাধিক সদস্য ছিলেন মন্ত্রিসভায়। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেন তারা। এবার শরিক দলের কাউকে অন্তর্ভুক্তি ছাড়াই মন্ত্রিসভা ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট যে মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ ছাড়া শরিকদের কেউ নেই।

২০০৮ সালের মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন জাতীয় পার্টির তিনজন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নু। ২০১৪ সালে গঠিত সরকারেও জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনজন। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি এবার শুধু বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে নতুন মন্ত্রিসভায় নেই জাতীয় পার্টির কেউ।

২০০৮ ও ২০১৪, দুই সরকারেই পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও জাসদের হাসানুল হক ইনু। তাদের কেউই নেই এবারের মন্ত্রিসভায়।

শরিক দলের নেতাদের মন্ত্রিত্ব না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সাতজন সদস্য শপথগ্রহণ নাও করতে পারেন। সেই হিসাবে সংসদে সরকারের বিভিন্ন কাজের গঠনমূলক সমালোচনা নাও হতে পারে। সেই বিবেচনায় এবার ১৪ দলীয় জোট থেকে কোনো সদস্যকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি।’

মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত পাঁচ বছরের মতো দ্বৈত ভূমিকায় তারা থাকবে না। মন্ত্রী হবেন না কেউ। 
মহাজোটের অন্য শরিকদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও তার দলীয় প্রতীক বাইসাইকেলে ভোট করায় তিনি সরকারি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। তবে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন আর বিকল্পধারা নৌকা নিয়ে ভোটে লড়ায় তারা সরকারি দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন না সংসদে। 

তাহলে এরা সরকারের সমালোচনা করলে সেটি কেমন হবে- এমন প্রশ্নে ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘সাংবিধানিক কারণে সরকারি দলের আনা বিলের বিরোধিতা তারা করতে পারবেন না। তবে তারা গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই করতে পারবেন। তারা সরকারের অনেক ভুলও তার ধরিয়ে দিতে পারবেন। দশম সংসদের অধিবেশনে এটা ঘটেছে।’ 

১৯৭৫ সালের পরবর্তী ১৯৯৬ সালে ১২ জুনের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করে। জোটের শরিক না হয়েও সেই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, দেওয়া হয়েছিল যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব। পরে এরশাদ সমর্থন সরিয়ে নিলেও মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেননি তিনি। 
ওই মন্ত্রীসভায় নৌ-পরিবহনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান বর্তমানে ঐক্যফ্রন্টের নেতা তৎকালীন জাসদের আ স ম আব্দুর রব। 

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস  

Scroll to Top