তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরেছে বলা যায় না: সালাউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এখনই ফিরেছে সেটা বলা যায় না।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরার অপেক্ষা করে বিএনপি।

তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আংশিক বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়কে স্বাগত জানাই। কিন্তু রিটকারীদের আশা ছিল পুরো সংশোধনীই বাতিল হবে। সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার নির্বাচিত সংসদের, আদালতের রায়ে সেটি স্পষ্ট হয়েছে।

আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিধান অবৈধ: হাইকোর্ট

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আংশিক বাতিল করেছেন। এরমধ্যে অন্যতম হলো দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল।

এছাড়া সংবিধান সংশোধনে গণভোটের বিধান পুনর্বহাল করেছেন হাইকোর্ট। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ সংক্রান্ত সংশোধনীর দুটি ধারাও বাতিল করেছেন আদালত। এই তিনটি বিষয়ে রায় দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আংশিক বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে হয়েছিল। যে কারণে এটি সংবিধানের মৌলিক ভিত্তি হয়ে গেছে।

হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল। তবে পঞ্চদশ সংশোধনী পুরোপুরি বাতিল হবে না।

আদালত আরও বলেন, সংবিধানের মূল কাঠামো হচ্ছে গণতন্ত্র। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই পারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। সংবিধানের সৌন্দর্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।

২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধানে শেষ পেরেক ঠুকে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করলে রাষ্টদ্রোহিতার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয় এ সংশোধনীর মাধ্যমে।

এছাড়া সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে বিধান আনা হয়, যা আগে ছিল সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার। এরকম ছোট বড় ৫৫টি সংশোধনী আনা হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে।

এ আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্টজন রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

শুনানিতে আইনজীবী বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীতে একই সঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি রাখা হয়েছে; যা পরস্পরবিরোধী ও সাংঘর্ষিক। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়।

গত ৪ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি শেষ হয়। রিটভুক্ত হয় বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি সংগঠন। প্রায় সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহালের পক্ষে মত দেন।

Scroll to Top