ট্রাস্টের টাকা ফান্ডেই আছে, আত্মসাৎ করেননি খালেদা জিয়া: দুদক আইনজীবী

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আত্মসাৎ করেননি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান। ওই টাকা ট্রাস্টের ফান্ডেই রয়েছে বলে জানান তিনি।

রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা লিভ টু আপিল শুনানি হয়।

এদিন আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

আপিল বিভাগে দুদক আইনজীবী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি। টাকা ট্রাস্টের ফান্ডেই আছে।

পরে শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার (১১ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওইদিন সন্ধ্যায় বিএনপি, জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে বঙ্গভবনে বৈঠকে বসেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফের। পরদিনই যার গেজেট প্রকাশ করা হয়।

রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করার পরও ৩ নভেম্বর এ মামলা নিয়ে হাইকোর্টে এক আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। সেখানে বলা হয়, এ মামলার শুনানি তারা করতে চান দ্রুত। আর তাই পেপারবুক প্রস্তুতও করতে চান নিজ খরচে। পরে বেগম খালেদা জিয়ার সেই আবেদন মঞ্জুর করেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, কারও ক্ষমায় নয়, আইনি পথে হেঁটেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান বেগম জিয়া।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫’র বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি)। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সাজা হয় মামলার অপর তিন আসামিকেও।

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন: খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। সে সময় হারিছ চৌধুরী পলাতক ছিলেন। বাকি আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Scroll to Top