জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের শিকার আবদুর রহিম অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগ ইউনিটের ছাত্রলীগ সভাপতি। এ ঘটনায় জবি ছাত্রদলের সদস্য তারেক হাসানও মারধরের শিকার হন।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সহপাঠী ওই ছাত্রদল নেতার কাছে রাখা মোটরসাইকেল নিতে ক্যাম্পাসে আসেন ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রহিম। এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটক করে কয়েক দফা মারধর করেন।
আবদুর রহিমের মোটরসাইকেলটি তাঁর কাছে থাকার বিষয়টি জানালে ছাত্রদল নেতা তারেককে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নুরুন নবী থাপ্পড় দেন। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী তারেককে মারধর শুরু করেন। পরে ওই ছাত্রদল নেতার পরিচিত ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। ছাত্রলীগ নেতাকেও ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিএনপিপন্থী শিক্ষকেরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
ওই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম রেখে যাওয়া মোটরসাইকেল নিতে। বিভাগের বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলা দেখা করতে যাওয়ার পথে ১০-১২ জন আমাকে ধরে নিয়ে রফিক ভবনের সামনে এলোপাতাড়ি মারধর করে। কিছুক্ষণ পরে অবকাশ ভবনের সামনে আরও ২০-২৫ জন এসে এলোপাতাড়ি মারধর করে। নতুন ভবনের নিচে গিয়ে আরেক দফা মারধর করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে আসি।’
মারধরের শিকার ছাত্রদল নেতা তারেক বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে বাইকটি আমার কাছে ছিল। বাইকের প্রয়োজন হলে তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যেতে বলি। এ সময় তাঁকে আটক করা হয়। যেহেতু বাইকটি আমার দায়িত্বে ছিল, তাই বাইকটি নিরাপদে স্থানে রেখে ক্যাম্পাসে এসে তাঁর খোঁজ করি। তখন আমাকেও ধরে মারধর করে এক সমন্বয়ক ও সেখানে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী।’
ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, ‘ঘটনা যাই হোক আমাকে বা সেই ছাত্রলীগ নেতা কাউকেই মারার অধিকার কেউ রাখেন না। আমি শুরু থেকেই কোটা সংস্কার ও সরকার পদত্যাগের আন্দোলনে ছিলাম। যদি কোনো দোষ থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না।’
অভিযোগের বিষয়ে নুরুন নবী বলেন, শিক্ষার্থীরা যে ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছিলেন, তিনি আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের হুমকি প্রদান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। এ ঘটনায় তাঁর সহপাঠীও শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়েন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। কেউ যদি আঁতাত করেও থাকেন, তবে তাঁরা দলে কেউ নন।