ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যমে একেকরকম বক্তব্য দিয়ে আসছেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
জয় কয়েকবার দাবি করেছেন যে, তার মা শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। এবার বলেছেন, আগামী তিন মাস তথা ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন চান। এজন্য ভারতের পদক্ষেপ আশা করছেন তিনি। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
গত ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে এসেছে ভারত। তিন তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগকে একচেটিয়া সমর্থন দেয় ভারত। দিল্লি-ঢাকার রাজনীতিতে এটা ওপেন সিক্রেট। ক্ষমতা হারিয়ে
এখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের আশা, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে পদক্ষেপ নিবে ভারত সরকার।
বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জয় বলেন, ‘আমি আশা করব, ভারত নিশ্চিত করবে যে ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, অরাজকতা বন্ধ হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে। যদি সেটা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনও নিশ্চিত যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হবো। আমরা এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।’
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতা নিহত এবং গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দােলন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দ্রুত তা রুপ নেয় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে। সোমবার কারফিউ ভেঙে ঢাকায় রাস্তায় জনতার ঢল নামে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মা শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
ওই দিনের পরিস্থিতি নিয়ে জয় আরো বলেন, ‘মায়ের দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না। তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন এবং জনগণের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেবেন। তিনি বিবৃতির খসড়া তৈরি করেছিলেন এবং সেটি রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সবকিছু পরিকল্পিত ছিল। তিনি যখন রেকর্ডিং শুরু করতে যান, তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ম্যাম, সময় নেই। আমাদের এখন যেতে হবে।’
‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে সামরিক বিমানঘাঁটির মধ্যে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তিনি যেতে চাননি। তখনই আমার খালা (শেখ রেহানা) আমাকে ডাকলেন। আমি মাকে বোঝালাম যে তোমার নিরাপত্তার জন্য তোমাকে চলে যেতে হবে। যদি এই জনতা তোমাকে খুঁজে পায়, কোথাও ধরে ফেলে এবং সেখানে গুলি চলে, তাহলে অনেক মানুষ মারা যাবে। হয় তোমাকে এই হত্যার জন্য দায় দেবে কিংবা যদি তোমাকে ধরে ফেলে তাহলে মেরে ফেলবে। তাই সবচেয়ে ভালো হবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং আমিই তাকে চলে যেতে রাজি করিয়েছি।’