দেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে এ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আকস্মিকভাবে ক্ষমতাচ্যুত হলে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নেতৃত্ব দিতে সম্মত হন।
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর এ আহ্বানের কথা জানান।
১৫ বছরের কিছু বেশি সময় দেশ পরিচালনার পর তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যান। ইতিমধ্যে, দেশজুড়ে সহিংসতার ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষ নিহত হন। সপ্তাহব্যাপী এ সহিংসতা গত সোমবারও অব্যাহত ছিল। চলছিল লুট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর হঠাৎ করেই যে ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হয়েছেন তিনি।
মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকারের ওপর দ্রুত আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শান্ত হওয়া দরকার, নতুন নির্বাচনের জন্য একটা রূপরেখা দরকার। বাংলাদেশের অসাধারণ সম্ভাবনা পূরণে নতুন নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত হতে আমাদের কাজ করা দরকার।’
শেখ হাসিনার সরকারের অধীন মুহাম্মদ ইউনূস একাধিক মামলা ও তদন্তের মুখে পড়েন। ইউনূসের সমর্থকেরা এসব মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেন। ইউনূস বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। তবে রাজি হতে হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেছেন, ‘সরকারের ওপর দ্রুত আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। আমাদের শান্ত হওয়া দরকার, নতুন নির্বাচনের জন্য একটা রূপরেখা দরকার। বাংলাদেশের অসাধারণ সম্ভাবনা পূরণে নতুন নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত হতে আমাদের কাজ করা দরকার।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ, বিশেষ করে যারা আমাদের দেশের ‘‘স্বাধীনতার’’ জন্য জীবন দিয়েছে, সে কথা বিবেচনা করে আমি তাদের (শিক্ষার্থীদের) না বলতে পারিনি।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে পুনর্গঠনে আমরা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি ও তারা কীভাবে সাহায্য করতে পারে, সেসব বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে আমি সংশ্লিষ্ট সব দলের সঙ্গে কথা বলব। এই অন্তর্বর্তীকালীন ভূমিকার বাইরে কোনো নির্বাচিত বা নিয়োগকৃত পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’
অনেক বাংলাদেশিরই আশা, ড. ইউনূসের এ দায়িত্ব গ্রহণ ও দ্রুত নির্বাচন বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে চলা সবচেয়ে অস্থির সময়ের একটির অবসান ঘটাবে।