বিলুপ্তির তিন সপ্তাহ পরে জাতীয়বাদী যুবদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই কমিটি নিয়েও সমালোচনা এড়াতে পারেনি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কমিটির নেতাদের যোগ্যতা নিয়ে বেশ বিতর্ক হচ্ছে। তা ছাড়া জুনিয়র তিন নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ায় তাঁদের সিনিয়রদের কিভাবে পদায়ন করা হবে, সে প্রশ্নও উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
সম্প্রতি দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে ৪৫ জন নেতার পদায়ন নিয়ে সমালোচনার পর এবার যুবদলের কমিটি নিয়েও বিতর্ক হচ্ছে। অন্তত তিনটি পদের বিষয়ে দলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
আবদুল মোনায়েম মুন্নাকে সভাপতি ও নুরুল ইসলাম নয়নকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহসভাপতি রেজাউল করিম পলকে সিনিয়র সহসভাপতি, বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেককে ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিলুপ্ত কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েলকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিলুপ্ত কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেলকে দপ্তর সম্পাদক করা হয়েছে।
মোনায়েম মুন্নার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকে বিরোধিতা করলেও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন। মূলত তাঁর বিষয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরোধিতার কারণে যুবদলের কমিটি গঠন বিলম্বিত হয়েছে।
যুবদলের নেতারা জানান, ঘোষিত নতুন কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি, ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রাপ্তদের নিয়ে অনেকেরই আপত্তি আছে।
অপেক্ষাকৃত জুনিয়র এই তিন নেতাকে অতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও তাঁদের নেই।
অবশ্য কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না। সংগঠনের সাবেক একাধিক সহসভাপতি কালের কণ্ঠকে বলেন, সিনিয়র সহসভাপতি, ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে যাঁদের রাখা হয়েছে তাঁরা যোগ্য নন। বিগত আন্দোলনে তাঁরা এমন কোনো ভূমিকা রাখেননি যে তাঁদের এই পদে দিতে হবে।
বিক্ষুব্ধ নেতারা বলেন, বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি হিসেবে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন রেজাউল করিম পল। ওই কমিটিতে এর আগে ১৬ জন সহসভাপতি ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে এখন পলের নিচে তাঁরা কেউ রাজনীতি করতে চাইবেন না।
বিল্লাল হোসেন তারেক আগের কমিটিতে ১২ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার আগে শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মাওলা শাহীন, আনোয়ারুল হক রয়েলসহ অনেক নেতা ছিলেন। তাঁদের কোথায় পদায়ন করা হবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
আগের কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। অথচ সাঈদ ইকবাল টিটু, আসাদুজ্জামান পলাশ, আব্দুল করিম সরকার, মহানগর দক্ষিণের খন্দকার এনামুল হক এনামসহ আরো অন্তত ৩০ জন নেতা আছেন, তাঁদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে, সে প্রশ্নও আছে।
রুহুল কবীর রিজভী বলেন, জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতামত নেওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক থাকা উচিত নয়।