আন্দোলনের লক্ষ্যে আবার নিজেদের গুছিয়ে তোলার চেষ্টা করছে বিএনপি। একই সঙ্গে ‘গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের’ দাবিতে সোচ্চার বিরোধী দলগুলোকে সক্রিয় করতে চাইছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা। এ লক্ষ্যে তাঁরা যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনার পর নতুন করে রাজনৈতিক কর্মকৌশলের চিন্তা করছেন।
বিএনপির নেতারা বলছেন, ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটের হার সর্বনিম্ন হয়েছে। এটাকে তাঁরা বর্তমান সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের অনাস্থা এবং বৈরী মনোভাবের প্রতিফলন বলে মনে করছেন। তাঁদের মূল্যায়ন, ক্ষমতাসীনদের প্রতি মানুষের বিরক্তি প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু বিরোধী দল সেটাকে কাজে লাগাতে পারছে না। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংসদ ও উপজেলা নির্বাচন বর্জনকারী বিরোধী দলগুলোকে খুব শিগগির ঐক্যবদ্ধ করে একটা যুগপৎ কর্মসূচি শুরুর চেষ্টা করছেন বিএনপির নেতৃত্ব। তবে সে পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, মূলত এ লক্ষ্যেই যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে বিএনপি। তারই অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবের শারীরিক খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা সামনের রাজনৈতিক কর্মকৌশল নিয়েও কথা বলেন বলে জানা গেছে। এর আগে গতকাল বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই দিনের বৈঠকে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে বিপর্যয়, টাকার অবমূল্যায়ন, ব্যাংকসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, রাষ্ট্রীয় ঋণের দ্রুত বৃদ্ধি, সীমান্তে মানুষ হত্যা—এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান নেতিবাচক পরিস্থিতিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তার উপায় খুঁজে বের করার দিকে জোর দিয়েছেন নেতারা।
কোন কৌশলে, কীভাবে আবার সংগঠিত উপায়ে আন্দোলন জোরদার করা যায়, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে। অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে মতামত দিয়েছেন।