নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রতিবেদন বাস্তবতা বিবর্জিত বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন। আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যাদের সাজা হচ্ছে তা সবই সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই করা হচ্ছে। যারা যানবাহন, গাড়ি পোড়াচ্ছে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করবেই। সাক্ষ্য, প্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে বিচার করা হচ্ছে না।
এর আগে রোববার (২৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে দাবি করে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ দেশটির বিরোধী নেতাকর্মী-সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত, নিরপেক্ষভাবে সহিংসতার সব ঘটনা তদন্ত করা। এর মধ্যে এমন সব ঘটনাও আছে, যে ক্ষেত্রে একপক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একটি পূর্বপরিকল্পিত সমাবেশের পর থেকে প্রায় ১০ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলমান সহিংসতায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া-বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক অংশীদারদের কাছে দাবি করছে, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু একই সঙ্গে দেশটির রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিরোধীদের দিয়ে কারাগার ভরছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক অংশীদারদের এই বিষয়টি স্পষ্ট করা উচিত যে, সরকারের কর্তৃত্ববাদী দমন-পীড়ন ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বিপন্ন করবে।
১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষাৎকার, বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভিডিও এবং পুলিশ রিপোর্টের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রমাণ পেয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ, গণনির্বিচারে গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য সাম্প্রতিক নির্বাচন-সংক্রান্ত সহিংসতা দায়ী।