নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে কানাডার দুই পুলিশ সদস্যের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলেও কানাডায় ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ দাখিলের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
আর এজন্য রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা কেবিন দুগ্গান ও লয়েড শোয়েপকে আদালতে হাজির হতে আবার সমন পাঠাবে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের রিকলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বিদেশি সাক্ষী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন এবং কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর তিন বিদেশি সাক্ষীকে আসার অনুমতি দেন আদালত। এরপর ১৯ অক্টোবর কানাডিয়ান দুই সাক্ষীকে আদালতে হাজিরের সমন দেন আদালত। ওইদিন বিচারক দুই সাক্ষী কেবিন দুগ্গান ও লয়েড শোয়েপের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর শোয়েপের জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
পরদিন ২০ অক্টোবর সাক্ষী কেবিন দুগ্গানের জেরা হয়। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ দুই সাক্ষীকে রিকলের আবেদন করেন। এরপর আদালত শুনানির জন্য ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। এর আগে এ মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালে ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অন্য সাত আসামি হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় এ মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।